-67adcfc85c965.jpg)
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় ৬০টির বেশি সংগঠন কাজ করছে। ভর্তি পরীক্ষার শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ জেলার ছাত্রকল্যাণ সমিতিগুলো সবচেয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনও তাদের সহায়তা প্রদান করছে।
বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় নেত্রকোনা, রাজশাহী, পঞ্চগড়, মানিকগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও, কিশোরগঞ্জ, সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা, খুলনা, মাগুরা, দিনাজপুর, রংপুর, টাঙ্গাইল, যশোর, জয়পুরহাট, সিলেট, বগুড়া, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম, শেরপুর, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নোয়াখালী, মুন্সিগঞ্জ, নীলফামারি, মাদারীপুর, ঝিনাইদহ, লালমনিরহাট, নাটোর, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, জামালপুর, পাবনা, ঢাকা, চট্টগ্রাম, ভোলা, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুষ্টিয়া, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, মেহেরপুর, চাঁদপুর, ফেনী, বরিশাল, নরসিংদী, পটুয়াখালী ও বাগেরহাট জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের দায়িত্বশীলদের কাজ করতে দেখা যায়।
এছাড়াও আদিবাসী ও সনাতনী শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় দুটি সংগঠন, ধামরাই উপজেলা এসোসিয়েশন এবং নটরডেম কলেজের একটি সংগঠন কাজ করছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনগুলোও সক্রিয়ভাবে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সহায়তা প্রদান করছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের দুটি শাখা এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের দুটি শাখার কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়।
ক্যাম্পাসে বিদ্যমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটারের দুটি শাখা, স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধন এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করা 'তরী স্কুল'-এর পক্ষ থেকেও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ঢাকা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকেও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে নেত্রকোণা জেলা ছাত্রকল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বাংলা বিভাগের ৪৮তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মো. এমরান হোসেন জানান, ‘মানুষকে একদিন তার শেকড়ে ফিরেই যেতে হয়। আমরাও শেকড়ের টানে একদিন নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যাবো। আর নিজের শেকড় থেকে আসা কিছু স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।’
তিনি আরও বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ভর্তি পরীক্ষা কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরনের সহায়তার উদ্দেশ্যই কাজ করে যাচ্ছে নিজ জেলার ছাত্রকল্যাণ সমিতিগুলো। এই স্বেচ্ছাসেবী কাজ করতে গিয়ে আমরা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছি। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূরীকরণে দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার (অডিটোরিয়াম)-এর সাধারণ সম্পাদক সুমাইয়া জাহান বলেন, ‘আমরা বিগত ৪৫ বছর ধরে ক্যাম্পাসে নাট্যচর্চা করে আসছি। যারা নতুন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী এখানে এসেছেন, তাদের কাছে আমাদের পরিচয় তুলে ধরার পাশাপাশি তারা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, সেগুলো কিভাবে কমানো যায়, এটাই আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য।’
স্বেচ্ছায় রক্তদাতাদের সংগঠন বাঁধনের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জোনের সভাপতি মাজহারুল ইসলাম সাগর বলেন, ‘আমরা বরাবরের মতো এবারো ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে তথ্য সহায়তা কেন্দ্র স্থাপন করেছি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের বিশ্রাম ব্যবস্থা করেছি এবং ফ্রি-তে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করছি। বাঁধন সবসময় জীবন্ত ব্লাড ব্যাংক হিসেবে কাজ করে। তাই আমরা তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতাদের ডাটাবেজ তৈরি করছি, যাতে আমরা বিভিন্ন এলাকায় বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি চালাতে পারি।’
বাঁধন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় জোন ভর্তি পরীক্ষার প্রথম ৪ দিনে মোট ১০৯৬ জনের বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে দিতে সক্ষম হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
আমানউল্লাহ খান/এমএইচএস