তরমুজভর্তি ট্রলার লুট, সেই ছাত্রদল নেতা গ্রেপ্তার

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:৩৯

পটুয়াখালীর বাউফলে এক কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই করে লুটপাটের ঘটনায় নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলামকে (৩৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়ন থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে বাউফল থানার পুলিশ।
গ্রেপ্তার সাইফুল ইসলামের বাবা এনায়েত হোসেন খান নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। অভিযোগ রয়েছে, সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত তেঁতুলিয়া নদীর চর রায় সাহেব পয়েন্ট থেকে ৮৬০ পিস তরমুজভর্তি একটি ট্রলার ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. মানিক ব্যাপারী (৪৫) বাউফল থানায় সাইফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে সাইফুল ইসলামকে। পাশাপাশি তার বাবা এনায়েত হোসেন খানকেও (৫৮) আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কৃষক মানিক ব্যাপারী তার ক্ষেত থেকে ৮৬০ পিস তরমুজ সংগ্রহ করে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে সাইফুল ইসলাম ও তার দলবল ট্রলারের চালক মো. আরিফকে (১৮) মারধর করে এবং তরমুজ ভর্তি ট্রলারটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
খবর পেয়ে কৃষক মানিক ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইতে গেলে সাইফুল ও তার সহযোগীরা তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা তরমুজগুলো অন্য একটি ট্রলারে তুলে নিয়ে যায়। পরে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে খালি ট্রলারটি ফেরত দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী কৃষক মানিক ব্যাপারী অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় মামলা করলে বা কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবদল নেতা জানান, সাইফুল ও তার বাবা এনায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি উপায়ে টাকা তোলার অভিযোগও রয়েছে। এর আগেও সাইফুলকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একাধিকবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সাইফুল ইসলামের গ্রেপ্তার হওয়ার পর নাজিরপুর ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের মানুষ উল্লাস প্রকাশ করেছেন। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও তার গ্রেপ্তারে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন খান বলেন, এ বিষয়ে আমার বক্তব্য আছে। কিন্তু আজকে দিব না। প্রেস কনফারেন্স, মানববন্ধনসহ সবকিছুই করবো। আমাকে সময় দিন।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা প্রকৃত ঘটনা অনুসারে ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সেই অভিযোগ অনুযায়ী মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরিফুল ইসলাম সাগর/এমবি