বান্দরবানে শিক্ষা অফিসে অফিসারদের মারামারি, থানায় অভিযোগ

বান্দরবান প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০:০১

বান্দরবানে থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খানকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা থেকে আসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জেলা শিক্ষা অফিসের রেস্টরুম কক্ষে কথা-কাটাকাটির জেরে এ মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খান প্রতিকার চেয়ে বান্দরবান সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, অফিসিয়াল কাজে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বান্দরবানে আসেন এবং জেলা অফিসের রেস্টরুমে অবস্থান করেন। অফিসিয়াল কাজে দুপুরে জেলা শিক্ষা অফিসারের কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় স্যারের সামনে দুজন অপরিচিত লোক বসা ছিলেন। স্যারের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে পাশে বসে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মনিটরিং অফিসার রোকনুজ্জামান উপর্যুপরি ডানহাতে তার বাম গালে ও কানে থাপ্পড় মারতে থাকেন।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, তার সঙ্গে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিনও তার সঙ্গে একমত পোষণ করে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। এছাড়াও তাদের হাত থেকে বাঁচানোর নামে বান্দরবান জেলা অফিসের অফিস সহায়ক জামাল কলার ধরে টানতে টানতে রুম থেকে বের করে পাশের কক্ষের দেয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে কপাল থেতলে দেওয়ার চেষ্টা করেন।
তবে কেন বা কী কারণে মারধর করা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খান।
এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মনিটরিং অফিসার রোকনুজ্জামান। তিনি বলেন, মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। মূলত আমরা ঢাকা হেড অফিস থেকে স্কুলের কার্যক্রম তদারকির বিষয়ে বান্দরবানে এসেছি। অফিসিয়াল নিয়মানুযায়ী বান্দরবান জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের রেস্ট হাউজে থাকার কথা থাকলেও আগে থেকে তিনটি রুম বান্দরবান সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁঞা ও থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার আসলাম খান দখল করে রাখেন। এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে কথা বলার এক পর্যায়ে থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার উত্তেজিত হয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে বারবার বাইরে চলে যাওয়ার কথা বললেও তিনি কারও কথা না শুনে গালিগালাজ করতে থাকেন। পরে আমরা সবাই মিলে তাকে রুমের বাইরে নিয়ে আসি।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) আবু ছালেহ মুহাম্মদ ফরিদ উদ্দীন বলেন, ঢাকা থেকে দুজন কর্মকর্তা এসেছিলেন। তারা আমার রুমে বসে ছিলেন। এমন সময় থানচি উপজেলা শিক্ষা অফিসার রুমে প্রবেশ করেন। আমি তাকে অতিথিদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলে তিনি তাদের পাত্তা দেননি। এমনকি তাদের সঙ্গে অযাচিত কথা বলা শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনি তাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
তিনি আরও বলেন, আমি থামানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু তিনি আমার কথাও শোনেননি; বরং আমাকেও মারার জন্য তেড়ে আসেন। পরে ঢাকার এক কর্মকর্তা তাকে রুম থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে হালকা হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। তবে তাকে মারধর করা হয়নি। শুধু ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
উল্লেখ্য, আসলাম খান ২০০০ সালে থানচি উপজেলায় মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন।
সোহেল কান্তি নাথ/এমবি