চিরকুটে ‘আমাকে বাধ্য করা হয়েছে’ লিখে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১১:২২

পটুয়াখালী বাউফলে নাজনিন জাহান কুমকুম (১৫) নামে দশম শ্রেণি পড়ুয়া এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। শুক্রবার (১৪ মার্চ) উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামে খান বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যার আগে সে একটি চিঠি লিখে যায়। চিঠিতে নাজনিন লিখেছে, ‘আমি আমার নিজের ইচ্ছায় কিছু করিনি, আমাকে বাধ্য করা হয়েছে ।ওই ছেলের জন্য ওর পরিবারের জন্য আমার জীবন থেকে মনে হয় সব সুখ সাতি (শান্তি) চলে (গেছে)।‘
নিহত শিক্ষার্থীকে পথেঘাটে ইভটিজিংসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে ছবি পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করায় তিনি আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পরিবারের।
নিহত শিক্ষার্থী ওই বাড়ির নজরুল খানের মেয়ে ও পূর্ব কালাইয়া হাসান সিদ্দিক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত কিশোর রিয়াদুল ইসলাম তাওসিন (১৫) একই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও শৌলা গ্রামের রিয়াজ চৌকিদারের ছেলে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কিশোরীকে পথেঘাটে ইভটিজিং করে আসছিল প্রতিবেশী কিশোর তাওসিন। বিষয়টি তারা তাওসিনের চাচা ও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শুক্রবার কিশোরী ও তার এক সহপাঠী কিশোরের একসাথে তোলা একটি ছবির সাথে নোংরা মন্তব্য লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয় অভিযুক্ত তাওসিন। এরপরে খাতায় একটি চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেন কুমকুম।
পুলিশ জানায়, দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে ওই কিশোরী আত্মহত্যা করেছে। প্রথমে পরিবার নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত করাতে চায়নি। তাই বিষয়টিকে বিদ্যুতিক দুর্ঘটনাজনিত অপমৃত্যু বলে স্থানীয়দেরকে ও পুলিশকে জানায়।
মরদেহ হাসপাতাল থেকেই বাড়িতে নিয়ে রাতে দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পরিবার। তখন স্থানীয়রা মরদেহের গলায় ফাঁসের মতো চিহ্ন দেখতে পায়। মেয়ের রুমে খাতায় লেখা চিরকুটের সন্ধান পায় পরিবারের সদস্যরা। পরে ঘটনাটি থানা পুলিশকে অবহিত করে পরিবার। রাত ১০টার দিকে পুলিশ ভুক্তভোগী কিশোরীর বাড়িতে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানায় পুলিশ।
এ বিষয়ে বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় এক কিশোরের ইভটিজিংয়ের কারণে ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে ধারণা পরিবারের। এখনো লিখিত অভিযোগ করেনি ভুক্তভোগী পরিবার। তবুও অভিযোগের বিষয় গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে পুলিশ। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের অভিযান চলমান রয়েছে।
- আরিফুল ইসলাম সাগর/এমজে