কাজে অবহেলার অভিযোগ
নির্মাণের একদিন পর ধসে পড়ল সড়ক!

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ মার্চ ২০২৫, ১৭:০৬

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় নির্মাণের একদিন পরেই ধসে পড়েছে বগা আরএসডি-বাহেরচর জিসি সড়ক। নির্মাণে নিম্নমান, অনিয়ম ও ঠিকাদারের দায়িত্বহীনতার অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার (১৯ মার্চ) উপজেলার কাছিপাড় ইউনিয়নের শহীদ জালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সড়কের সম্প্রসারিত অংশের একাধিক জায়গায় ধ্বসের সৃষ্টি হয়েছে। কার্পেটিংয়ের মাত্র একদিন পরেই এমন ধসের ঘটনা ঘটে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এলজিইডি কর্তৃক বগা থেকে কাছিপাড়া সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হয়। একাধিক প্যাকেজের মাধ্যমে দরপত্র আহ্বান শেষে সড়কটির প্রস্থ ১০ ফুট থেকে ১৮ ফুটে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, নির্মাণকাজ শুরুর পর থেকেই সিডিউল অনুযায়ী কাজ না করা, নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার এবং যথাযথ কারিগরি পদ্ধতি অনুসরণ না করায় সড়কটি নির্মাণের একদিন পরেই ধসে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ফোরকান প্যাদা ও মোকছেদুল ইসলাম বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী প্রকল্পের দুই পাশে পাইলিং করা প্রয়োজন হলে তা সড়ক নির্মাণের আগেই করতে হয়। কিন্তু ঠিকাদাররা সড়কের সাববেইজ ও ম্যাকাডাম করার পর পাইলিং নির্মাণ করেছেন। এরপর ইটভাঙা ডাস্ট ব্যবহার করে রোলার ছাড়াই কার্পেটিং করেছেন, যা সম্পূর্ণ অনিয়ম।’
স্থানীয় বাসিন্দা কাজী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি প্রকল্পের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে এমন অনিয়ম কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সিডিউল অনুসারে উপকরণ ব্যবহার না করে দায়সারা কাজ করা হয়েছে।’
নির্মাণকাজে নিযুক্ত কয়েকজন শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমাদেরকে যেভাবে কাজ করতে বলা হয়েছে, সেভাবেই কাজ করেছি। পুরো প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ছিল ১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা, যার মধ্যে ৬,৬৮৫ মিটার সড়ক নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছেন ঠিকাদার খায়রুল কবির রানা।’
এ বিষয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি আবুল কালাম বলেন, ‘যে অংশ ধসে পড়েছে, তা ঠিক করে দেওয়া হবে।’
বাউফল উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শ্যামল কুমার গাইন বলেন, ‘কাজ করতে গেলে কিছু ভুল-ত্রুটি হতে পারে। এখনো ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। যেখানে সমস্যা হয়েছে, সেগুলো ঠিক করে দেওয়ার পরই বিল দেওয়া হবে।’
- আরিফুল ইসলাম সাগর/এমজে