আত্মহত্যার হুমকি অকৃতকার্য ১৯ নারী শিক্ষার্থীর

বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১২:৩৭

ছবি : বাংলাদেশের খবর
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজের ১৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব শিক্ষার্থী চলতি বছরের টেস্ট পরীক্ষায় তিনের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়ায় আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি পাননি।
কলেজ কর্তৃপক্ষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয়। পরে বুধবার (১৯ মার্চ) ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আত্মহত্যার হুমকি দেন। তবে কলেজ প্রশাসন দাবি করেছে, আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫-৬ জনের বেশি নয়।
জানা গেছে, এবছর কলেজ থেকে মোট ১৩৯ জন শিক্ষার্থী টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ১৯ জন শিক্ষার্থী তিনের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়। তাদের পরীক্ষায় বসার অনুমতি না দেওয়ার বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়, যা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান উন্নয়নের অংশ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
তবে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা কলেজ কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেননি। তারা বিভিন্ন উপায়ে কর্তৃপক্ষকে রাজি করানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ব্যর্থ হন। এরপর ক্ষুব্ধ হয়ে তারা আত্মহত্যার হুমকি দেন।
ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অহিদুজ্জামান সুপন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুসারে তিনের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীরা বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। আমরা আমাদের সিদ্ধান্তে অটল ছিলাম, আর ফরম পূরণের সময়সীমাও ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুজাহিদুল ইসলাম তার ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট দিয়েছেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, টেস্ট পরীক্ষায় চার পেপারে ফেল করেও বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ায় কলেজ কর্তৃপক্ষকে আত্মহত্যার হুমকি দেওয়া অযৌক্তিক। কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ভালো ভাবে পড়াশুনা করে আগামী বছর বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে নির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে না দেওয়া আত্মহত্যার প্ররোচনার মধ্যে পড়ে না। যদি কেউ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দিয়ে থাকেন, তারাই মূলত শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন।
কলেজের স্বার্থে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য নিয়ম-কানুন পরিপালনের চেষ্টা করা হচ্ছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সহযোগিতার মানসিকতা পোষণ করে এবারের মত ছাড় দিয়েছেন। তবে তিনি বলেছেন, আগামীতে সেই সুযোগও দেওয়া হবে না। বোর্ড পরীক্ষায় ফেলের সংখ্যা আর বাড়তে দেওয়া হবে না।
কলেজ গভর্নিংবডির সভাপতি মো. মুজাহিদুল ইসলাম আরও বলেন, তিন বিষয়ের নিচে যারা অকৃতকার্য হয়েছেন, তাদের এবছর ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে ১৯ জন অকৃতকার্য শিক্ষার্থীকে ছাড় দেওয়ার প্রশ্নই আসেনা। আগামীতে শতভাগ কৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ করা হবে। কোনো বিষয়ে অকৃতকার্যদের ফরম পূরণ করা হবে না।
আরিফুল ইসলাম সাগর/এমবি