২৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় অপহরণকারীরা
প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ, মুক্তিপণ দিয়েও মিলনকে জীবিত পেল না পরিবার

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১৩:০২

মিলন হোসেন। ছবি : সংগৃহীত।
ঠাকুরগাঁওয়ে অনলাইনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মিলন হোসেন নামের এক কলেজছাত্রকে অপহরণ করে একটি চক্র। মুক্তিপণের জন্য ২৫ লাখ টাকা পরিশোধ করার পরেও পরিবার ছেলে মিলনকে জীবিত অবস্থায় ফিরে পায়নি। এর মধ্যে পুলিশ দুই অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে মিলনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার এবং মিলনের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে একজন হলেন, সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মহেশপুর বিট বাজার এলাকার মো. মতিয়র রহমানের ছেলে মো. সেজান আলী। তিনি নিজেকে স্থানীয় সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। দ্বিতীয় গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির নাম পরিচয় জানানো সম্ভব হয়নি।
পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই ঘটনার তদন্তে কাজ করছিলাম। প্রযুক্তির সাহায্যে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা স্বীকার করেছে যে, তারা মিলনকে হত্যা করেছে। তাদের দেখানো জায়গা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারকৃত সেজান আলীর বাড়ির পাশের একটি পরিত্যক্ত টয়লেটের নিচে মিলনের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ওসি মামুনুর রশিদ বলেন, ‘মিলনকে অপহরণের ঘটনায় বুধবার রাতে দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আমরা স্থানীয় সাক্ষীদের উপস্থিতিতে লাশ উদ্ধার করছি। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে।’
জানা গেছে, ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ঠাকুরগাঁও পলিটেকনিকের পিছনে প্রেমিকার সাথে দেখা করতে গিয়েই নিখোঁজ হন মিলন। ঘটনার পর অপহরণকারীরা পরিবারের কাছে ফোন করে প্রথমে ৩ লাখ, পরে ৫ লাখ, তারপর ১০ লাখ এবং শেষ পর্যন্ত ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। ৯ মার্চ রাতে মিলনের পিতা পানজাব আলী অপহরণকারীদের কাছে ২৫ লাখ টাকা পরিশোধ করেন।
২৩ বছর বয়সী মিলন হোসেন দিনাজপুর পলিটেকনিক কলেজের ছাত্র এবং ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাও গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ পেয়েও তাকে জীবিত ফেরত দেয়নি।
মিলনের পরিবার জমি বিক্রি ও ধারদেনা করে মুক্তিপণ হিসেবে ২৫ লাখ টাকা জোগাড় করেছিল। কিন্তু ছেলে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন।
- আবু সালেহ/এমজে