সমালোচনার ঝড়
এক দশক আগের হত্যাকাণ্ড, হঠাৎ আসামি সাংবাদিকরা

খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ২০:৩৮

ছবি : বাংলাদেশের খবর
খুলনার কয়রায় এক দশক আগের একটি হত্যা মামলায় সাংবাদিকসহ ১১৩ জনকে আসামি করায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
নিহত দিনমজুর জাহিদুল ইসলামকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া এ মামলায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাংবাদিকদের আসামি করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৭ এপ্রিল কয়রা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জাহিদুলের স্ত্রী ছবিরন নেছা মামলাটি করেন। আদালতের আদেশে কয়রা থানায় এটি এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত হয়।
মামলায় আসামিদের তালিকায় রয়েছেন কয়রা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, সাংবাদিক শাহজাহান সিরাজ, সিরাজুদ্দৌলা, ওবায়দুল কবিরসহ বেশ কয়েকজন সংবাদকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দা।
এ ঘটনায় কয়রা প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ মানবাধিকার ব্যুরো বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতি বলা হয়েছে, এ মামলা সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ ও হয়রানির ষড়যন্ত্র। সাংবাদিকদের মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
কয়রা প্রেসক্লাব সভাপতি সদর উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে হত্যা মামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হুমকিতে ফেলছে।’
সাংবাদিক কামাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি খুলনায় কর্মরত ছিলাম। আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে।’
মামলায় তার নাম আসায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। ফেসবুকে কেউ একে ‘মামলা বাণিজ্য’ বলছেন, কেউ বলছেন ‘ষড়যন্ত্র’।
জামায়াতের খুলনা জেলা আমীর এমরান হুসাইন বলেন, ‘এটা সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয়। কেউ প্রভাবিত হয়ে মামলা করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
বিএনপির খুলনা জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মোমরেজুল ইসলাম বলেন, ‘যারা জড়িত না, তাদের মামলায় না টানাই উচিত। সাংবাদিকদের নাম থাকা দুঃখজনক।’
সুজন খুলনার সভাপতি আইনজীবী কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘এভাবে সাংবাদিকদের আসামি করা হলে মানুষ আবার বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা হারাবে।’
মামলার বাদী ছবিরন নেছা সাংবাদিকদের নাম থাকা বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মমলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রাজেত আলী বলেন, ‘আমাকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিগগির তদন্ত শুরু হবে।’
তরিকুল ইসলাম/এআরএস