Logo

সারাদেশ

কিশোরগঞ্জে মহিলা লীগ নেত্রীকে বিশেষ অতিথি করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময়

Icon

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫০

কিশোরগঞ্জে মহিলা লীগ নেত্রীকে বিশেষ অতিথি করে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময়

ছবি : বাংলাদেশের খবর

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী মহিলা লীগ নেত্রীকে মঞ্চে রেখে ছাত্র, সাংবাদিক ও সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের তোপের মুখে পড়েন হাসনাত কাইয়ূম।

মতবিনিময়ে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ফাতেমা জোহরা আক্তার। সভার ব্যানারে লেখা ছিল— ‘রাষ্ট্র বাঁচাতে প্রয়োজন সংস্কার, সমঝোতা ও নির্বাচন’।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে প্রয়োজনে যার-তার সঙ্গে সমঝোতা করব।

এ সময় এক সাংবাদিক মঞ্চে বসা ফাতেমা জোহরাকে দেখিয়ে হাসনাতকে প্রশ্ন করেন, তার মানে আওয়ামী লীগের সঙ্গেও সমঝোতা করতে আপনি রাজি? এ জন্যই কি আওয়ামী লীগ নেত্রীকে মঞ্চে এনেছেন?

উত্তরে হাসনাত কাইয়ূম বলেন, আমাদের রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কিংবা রাষ্ট্রচিন্তার—দুইটারই ঘোষিত শত্রু আছে। একটা হচ্ছে গণহত্যাকারী কিংবা গণহত্যাকারীর আদর্শ যারা লালন করে। আরেকটা হচ্ছে যারা পাচারকারী। আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী—এ দুইটা দলকে আমরা মনে করি গণহত্যাকারী দল। আমরা এ দুইটা শত্রুর সঙ্গে আসলে কখনো ঐক্যবদ্ধ হব না।

তখন এক সাংবাদিক আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জোহরার মতবিনিময় সভার মঞ্চে বসা ও বক্তব্য রাখার ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করলে অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, আমার জানা নেই আসলে এখানে কোনো সহসভাপতি আছেন কি না। ফাতেমা জোহরা তার অবস্থান পরিষ্কার করবেন। আমরা যদ্দূর জানি, যখন থেকে সংস্কারের আলাপ করছিলাম, সংস্কারের রাজনীতি করছিলাম, তখন থেকেই দেখছি তিনি আমাদের রাজনীতির প্রতি সহানুভূতিশীল। তিনি আওয়ামী লীগের কোনো পদে আছেন বলে আমি শুনিনি। যদি থাকেন, তাহলে সেটি তিনি পরিষ্কার করবেন। আর এই না জানার জন্য আমি আপনাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি, ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

হাসনাত কাইয়ূমের বক্তব্যের পর আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জোহরা বলেন, আমি মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পরিচয় কখনো দিইনি। কখনো আওয়ামী লীগ করিনি। মিটিং-মিছিলে কোনো দিন যাইনি। উইম্যান চেম্বারের পরিচয়ে চলেছি।

আওয়ামী লীগের সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতিসংঘে সফরসঙ্গী হওয়ার বিষয়ে তাকে প্রশ্ন করা হলে ফাতেমা জোহরা আক্তার বলেন, আমি এফবিসিসিআই-এর প্রতিনিধি হিসেবে জাতিসংঘে গিয়েছি। মহিলা আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ। আমি পদত্যাগ না করলেও আওয়ামী লীগের পরিচয় আমি দিই না।

স্থানীয় রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফাতেমা জোহরা আক্তারের স্বামী অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং পিপি ছিলেন। আর ফাতেমা জোহরা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে এখনো দায়িত্বে আছেন।

ফাতেমা জোহরা আক্তার কিশোরগঞ্জ থেকে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়নও চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দলীয় মনোনয়ন পাননি। ফাতেমা জোহরা আক্তার জেলা উইম্যান চেম্বারেরও সভাপতি। সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে জোহরা দম্পতির ঘনিষ্ঠতার কথা সবাই জানে।

‘দেশ বাঁচাতে প্রয়োজন—সংস্কার, সমঝোতা ও নির্বাচন’ এ স্লোগানকে সামনে রেখে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন সোহেল আহমেদ। মো. জহিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক বিমল সরকার, অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন, খাইরুল মোমেন স্বপন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

আব্দুর রউফ ভুঁইয়া/এমবি 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর