Logo
Logo

সারাদেশ

এখন কী করব? বিএসএফের গুলিতে নিহত আনোয়ারের স্ত্রীর আহাজারি

Icon

জেলা প্রতিনিধি, পঞ্চগড়

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:৪৫

এখন কী করব? বিএসএফের গুলিতে নিহত আনোয়ারের স্ত্রীর আহাজারি

ভারতীয় সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আনোয়ার হোসেনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার দেবনগর ইউনিয়নের আমজুয়ানী এলাকায় পারিবারিক গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

নিহত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী লিপি আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তারা এক সঙ্গে ভাত খেয়েছেন। ওই সময় কে বা কারা ফোন করলে আনোয়ার বলে, ‘তোমরা থাকো, আমি আসতেছি।’ এই বলে সে চলে যায়। কোথায় যায় বলে যায়নি। ভোরে শুনি তার মৃত্যুর খবর। একমাত্র মেয়েটাকে স্কুলে ভর্তি করাতে চেয়েছিলাম, এখন কী করব।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। পরে বাড়িতে এনে বিকেলে এলাকার পারিবারিক গোরস্থানে আনোয়ারের কাফন-দাফন সম্পন্ন হয়। 

শুক্রবারের সকাল থেকেই আনোয়ারের পরিবারে চলছে শোকের মাতম। আর শনিবার সকাল থেকে লাশের অপেক্ষায় আহাজারি করছিলেন আনোয়ারের স্ত্রী-সন্তান ও বাবা-মা।

আনোয়ার হোসেন ওই এলাকায় রফিকুল ইসলাম ও আনোয়ারা বেগমের ছেলে। মাত্র ৭ শতক ভিটেবাড়ি ছাড়া আর কোনো জমাজমি নেই। বাবা রফিকুল ইসলাম স্থানীয় বাজারে ছোট্ট মাংসের দোকানে কাজ করেন। আনোয়ার হোসেন দর্জি কাজের পাশাপাশি দিনমজুরের কাজও করতেন। এটা দিয়েই চলতো পরিবার। 

এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে বাংলাদেশি কয়েকজন যুবকের সাথে আনোয়ারও ভারতে গরু আনতে যায়। গরু নিয়ে ফেরার সময় ভোরের দিকে পঞ্চগড় হাড়িভাসা ইউনিয়নের মোমিনপাড়া ও ভারতের শিংপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৭৫১ এর ৮ ও ৯ নং সাব পিলারের মাঝামাঝি এলাকায় এলে বিএসএফর ৯৩ ব্যাটালিয়নের চানাকিয়া ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে গুলি করলে আনোয়ার মারা যায়। পরে তার মরদেহ বিএসএফ নিয়ে যায়। এদিকে গুলির শব্দ পেয়ে চোরাকারবারিদের প্রতিহত করতে ৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করেন ঘাগড়া বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা। 

ঘটনার পর নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন বিএসএফের কাছে জোরালো প্রতিবাদলিপি পাঠান। ওই দিন দুপুরে বিজিবি-বিএসএফের ব্যাটালিয়নের কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিজিবির কাছে নিহত আনোয়ারের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে বিজিবি পুলিশের কাছে মিরদেহ হস্তান্তর করলে ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। শনিবার দুপুর ২টার দিকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে বিকেলে তার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ মরদেহ দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনায় গতকাল রাতেই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে।

এসকে দোয়েল/ওএফ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর