দুদকে মামলা
বদলি বাণিজ্যে স্বামী-স্ত্রীর ৭ কোটি টাকা লেনদেন

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯:০৬
-678ba769f2d75.jpg)
ছবি : বাংলাদেশের খবর
দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নার্স বদলির নামে ঘুষ লেনদেনে অভিযুক্ত কুষ্টিয়ার জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রী শাকিরন নেছার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে। এ দম্পতির বিরুদ্ধে ৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার বেশি ঘুষ লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, জামাল উদ্দিন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে নার্সদের পছন্দমতো কর্মস্থলে বদলি করতেন। এই বদলির বিনিময়ে তিনি ৫ ব্যাংকের ১৪টি হিসাবের মাধ্যমে ঘুষের টাকা গ্রহণ করতেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় ২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলা করেন।
সূত্র জানায়, রাজধানীর একটি হেলথ ফুড প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করার সময় জামাল উদ্দিনের নার্সিং অধিদপ্তরের কর্মচারীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তিনি নার্স বদলির ব্যবসা শুরু করেন। ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত তার ব্যাংক হিসাবে ৭ কোটি ২৩ লাখ ৫৪ হাজার টাকা জমা হয় এবং এর মধ্যে ৬ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
জামাল উদ্দিন ও তার স্ত্রীর আয়কর নথিতে বিভিন্ন সম্পদের বিবরণ পাওয়া গেলেও অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তাদের স্টক ব্যবসার কোনো বৈধ প্রমাণ নেই। দুদক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঘুষের টাকা দিয়ে তারা রড ও সিমেন্টের ব্যবসা শুরু করেছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জামাল নিজেকে বিভিন্ন সময়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দিতেন। তিনি তৎকালীন পুলিশের কিছু কর্মকর্তার সহযোগিতায় তার অনৈতিক কাজ চালাতেন। এমনকি জামিন নেওয়ার সময় ভুয়া প্রত্যয়নপত্রের মাধ্যমে নিজেকে বিএনপি নেতা হিসেবে দেখানোর অভিযোগও উঠেছে।
দুদক অনুসন্ধানের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘প্রমাণের ভিত্তিতে দুদক মামলা করেছে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে এবং দ্রুত চার্জশিট প্রদান করা হবে।’
জামালের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘জামাল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।’
সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে পরিচালিত এমন ঘুষ বাণিজ্য দেশের সেবাখাতের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা এ ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
আকরামুজ্জামান আরিফ/এমআই