রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তদন্তের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা। 

এ সময় রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, কোরআন পোড়ানোর এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা চরমভাবে মর্মাহত হয়েছে। এ কোরআন সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে তাদের এ ষড়যন্ত্রকে রুখে দিয়ে আমরা কোরআনের বিপ্লব ঘটাব।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করেন তারা। পরে রাবির প্রশাসন ভবনের সামনে এসে সমাবেশে মিলিত হন নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভ মিছিলটি সঞ্চালনা করেন রাবি ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক মোজাহিদ ফয়সাল।

এ সময় তারা ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহহু আকবার’, ‘আল কোরআনের আলো, ঘরে ঘরে জ্বালো’, ‘আল কোরআনের অপমান, সইবে নারে মুসলমান’, ‘রাসুলের অপমান, সইবে নারে মুসলমান’, ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন‘, ‘শিবিরের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন‘, ‘আমরা সবাই রাসুল সেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা’, ‘আমার নেতা তোমার নেতা, বিশ্বনবী মোস্তফা’সহ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভ সমাবেশে রাবি ছাত্রশিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক নওশাদ জামান বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি হলে কুরআন পড়ানো হয়েছে। ৫ আগস্টে স্বৈরাচার সরকার পালিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো তাদের অপতৎপরতা চলছে। দেশের দুইটা জায়গা তাদের প্রধান টার্গেট, রাজশাহী বিভাগ ও চট্টগ্রাম বিভাগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যতক্ষণ পর্যন্ত না কোরআন পড়ানোর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

এ সময় শিবিরের দপ্তর সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, গত ১২ জানুয়ারি কিছু দুর্বৃত্ত কোরআনে আগুন দিয়েছে। আমরা তাদের বলে দিতে চাই, তোমরা ঘুঘু দেখেছো, ফাঁদ দেখোনি। কোরআন পোড়ানোর আগুনের স্ফুলিঙ্গে তোমরা ধ্বংস হয়ে যাবে। কিছুদিন আগে ইরানে কোরআন অবমাননার কারণে এক খ্রিষ্টান পোপকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বলতে চাই, যারা কোরআন পোড়ানোয় জড়িত ছিল তাদের এ জোহা চত্বরে প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে। এজন্য যদি ছাত্রশিবিরকে আন্দোলনের মাঠে শহীদ হতে হয়, আমরা সেটার জন্যও প্রস্তুত।

রাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, কোরআন আমাদের হৃদয়ের স্পন্দন। কোরআন পুড়িয়ে আমাদের হৃদয়ে যে আঘাত দেয়া হয়েছে, সেই আঘাত মৃত্যু দিয়েও দেওয়া যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করছে, তারা চুপি চুপি কেন করেছে। আমাদের সামনে প্রকাশ্যে এসে কোরআন পোড়াক। তাহলে শুধু ছাত্রশিবির নয়, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করবে। 

উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও কেন্দ্রীয় মসজিদে একযোগে কোরআন পোড়ান দুর্বৃত্তরা। এতে রাবি প্রশাসন তদন্ত কমিটি গঠন করে সাত কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল করেন রাবি শাখার ছাত্রশিবির।

ফাহাদ/এমবি