চিত্রনায়িকা পরীমণির মাধ্যমে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার এলেঙ্গার টিন মার্কেটে ‘হারল্যান স্টোর’ নামক একটি কসমেটিক্স শপের শোরুম উদ্বোধন করার কথা ছিল। পরে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষের চাপের মুখে শোরুমের মালিক মীর মাসুন রানা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেন।
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৩টায় এ অনুষ্ঠানটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ অনুষ্ঠানের খবর প্রচারিত হওয়ার পরপরই বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। হেফাজতে ইসলামসহ বিভিন্ন স্থানীয় মহল পরীমণির উপস্থিতির প্রতিবাদে কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এলেঙ্গার টিন মার্কেটের শোরুমটির মালিক মীর মাসুদ রানা বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরীমণি থাকার কথা ছিল। গত ১০-১২ দিন ধরে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় মাইকিং করেছি। তবে পরীমণিকে নিয়ে স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। তারা আন্দোলনের পরিকল্পনা করেন। বিভিন্ন মসজিদে আলোচনা হয়েছে। পরীমণির আগমন ঠেকাতে স্থানীয় মসজিদে খুৎবা ও আলোচনার মাধ্যমে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা প্রচার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে থানা পুলিশ আমাদের আপাতত নিষেধ করেছে। পরে কোম্পানির সাথে কথা বলে তাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছি। পরে ফেসবুকে দেখেছি তাদের কর্মসূচিটিও বাতিল করেছে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলা শাখার যুববিষয়ক সম্পাদক মুফতি সুলাইমান হাবিব তার ফেসবুক পোস্টে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বাতিল হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং সকল ইমাম ও মুসল্লিদের অনুরোধ করেন এই বিষয় নিয়ে আর কোন আলোচনা বা সমালোচনা না করার জন্য।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলা শাখার যুববিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ কালিহাতি উপজেলার সভাপতি মুফতি সুলাইমান হাবিব তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে হারলেন শোরুম উদ্বোধন করার জন্য একজন চিত্রশিল্পী (পরিমণি) আশার কথা ছিল। এ বিষয়ে ধর্মপ্রাণ মানুষের মাঝে ব্যাপক নেতিবাচক আলোচনা হওয়ায় স্থানীয় ইমাম, আলেম-ওলামা ও ধর্মপ্রাণ কিছু ভাই গতরাতে আমার সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি অবহিত করেন। যার প্রেক্ষিতে আজ সকালে স্থানীয় ওলামায়ে কেরামসহ আমি শোরুমের মালিক মাসউদ (মাসুদ) ভাইয়ের সাথে কথা বলি। মাসউদ ভাই সবার সম্মান রক্ষায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে শনিবার প্রোগ্রাম স্থগিত করেন মর্মে আমাকে নিশ্চিত করেছেন। আমরা তার এ আন্তরিকতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এ বিষয় নিয়ে আর কোন আলোচনা-সমালোচনা বা মজলিস কায়েম না করার জন্য তিনি সকল ইমাম, আলেম-ওলামা ও মুসল্লি ভাইদের প্রতি অনুরোধ করেন।
কালিহাতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম ভূঁইয়া বলেন, হুজুররা ঝামেলা করেছিল। পরে কর্তৃপক্ষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি স্থগিত করেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হুসেইন বলেন, স্টোর কর্তৃপক্ষ আমার কাছে অনুমতি নিতে এসেছিল। তাদের শর্ত দেয়া হয়েছিল- সেখানে যানজট বা জনদুর্ভোগ করা যাবে না। সেটা মেনেই তারা রাজি হয়েছিল। তারা প্রোগ্রামটি করতে পেরেছিল কি না, বিষয়টি জানায়নি। বিষয়টি এসিল্যান্ড ভালো বলতে পারবে।
রেজাউল করিম/এমবি