যশোরের মণিরামপুরে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানকালে স্থানীয়দের হামলায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দুই এএসআই (সহকারী-উপপরিদর্শক) ও এক সিপাইসহ এক এসএসসি পরীক্ষার্থী আহত হয়েছেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের আগরহাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হলেন, যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এএসআই মামুন শাকি (৪৭), শরিফ মাহমুদ (৪৪) ও সিপাই তহিদুল ইসলাম (২০) ও এসএসসি পরীক্ষার্থী ওই গ্রামের মিনা গাজীর ছেলে শাহাজাহান আলী (১৬)।

মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, ইয়াবাসহ আটক একজনকে ছাড়াতে একদল সন্ত্রাসী স্থানীয়দের 

সহায়তায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে স্থানীয় গ্রামবাসীর দাবি, সাধারণ পোশাকধারী কয়েকজন লোক গ্রামে ইটভাটার পশ্চিম পাশে রাস্তায় আসলে তাদের পরিচয় জানতে চাওয়ায় কথাকাটাকাটির এক পর্যায় ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। কোনো মারপিটের ঘটনা ঘটেনি। 

পরে এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়াজ মাকদুম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অভিাযানে গাঁজাসহ আটক নজরুল ইসলামকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিন সকালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর যশোরের একটি টিম অভিযান চালিয়ে উপজেলার সুন্দলপুর গ্রাম থেকে নজরুল ইসলামকে গাঁজাসহ আটক করে। পরে তার সহযোগী আগরহাটি গ্রামের রুস্তম আলীকে আটকের সময় স্থানীয়রা বাধা দেন। তাকে ছাড়িয়ে নিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের লোকজনের ওপর স্থানীয়রা হামলা চালায়। এ সময় তিনজন আহত হন। আহতরা মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। 

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক হুমায়ুন রশিদ ওই তিনজনের প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে, স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির দাবি, সাধারণ পোশাকধারী অপরিচিতি কয়েকজন লোক গ্রামে আসলে স্থানীয়রা তাদের পরিচয় জানতে চান। এ নিয়ে গ্রামবাসীর সাথে কথাকাটাকাটি চলাকালে পাশে ইটভাটায় কাজ করতে থাকা এসএসসি পরীক্ষার্থী শাহাজাহান আলীও ঘটনাস্থলে আসেন। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সাথে সংঘর্ষে এই আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ ব্যাপারে যশোর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আসলাম হোসেন জানান, নজরুল ইসলাম (৪২) নামের এক গাঁজা ব্যবসায়ীকে আটকের পর ইয়াবাসহ তার সহযোগী রুস্তম আলীকে আটক করা হয়। এ সময় দুই এসএসআই ও এক সিপাইয়ের ওপর হামলা চালিয়ে মাদককারবারিকে স্থানীয়রা ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর ঘটনায় স্থানীয় থানায় অবহিত করলে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে এসে তাদের উদ্ধার করে। 

মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুর মোহাম্মাদ গাজী বলেন, ‘মাদকের আসামি ধরার সময় একটু ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করা হয়নি।’

জাহাঙ্গীর আলম/এমজে