Logo

অর্থনীতি

নিরাপত্তা চান জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা

Icon

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০২৫, ১৭:৩৩

নিরাপত্তা চান জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা

দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে চুরি ও ডাকাতি বেড়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ীদের ওপর হামলার ঘটনাও ঘটছে। আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে এসব ঘটনা বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বেগ জানিয়ে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা চেয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)।

শুক্রবার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডে বাজুস কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে সংগঠনটির স্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

এতে বলা হয়, ‘দেশের চলমান অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে কাজ করছে বাজুস। এই লক্ষ্যে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে দেশের প্রায় ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেশের জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও ব্যবসায়ীদের ওপর সরাসরি আক্রমণের ঘটনা বাড়ছে। পাশাপাশি জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের হত্যা, হত্যাচেষ্টা, অপহরণচেষ্টা আমাদের জানমালের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এমনকি বাসা বাড়িতেও জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও তার পরিবাররের সদস্যরা নিরাপদ বোধ করছে না। এসব অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় সন্ত্রাসীদের হাতে জুয়েলারি ব্যবসায়ী হত্যাচেষ্টার ঘটনাও বাড়ছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে বাজুস। এমন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদানে সরকারের আরও অধিকতর সহযোগিতা চায় সংগঠনটি।’

পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে জুয়েলারি শিল্প ঘিরে সংঘটিত অপরাধ দমনে বর্তমান সরকারের সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করায় তাদের প্রতি কৃতজ্ঞা ও ধন্যবাদ জানানো হয়।

জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘঠিত কয়েকটি ডাকাতির ঘটনার তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘সর্বশেষ গত ২৬ মার্চ ভোর ৫টায় বাজুসের সহসভাপতি ও দেশের স্বনামধন্য জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান অলংকার নিকেতনের কর্ণধার এম. এ. হান্নান আজাদের বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় ও ছদ্মবেশী ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল হামলা চালায়। এ সময় তার বাসা ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এমনকি এম এ হান্নান আজাদকে অপহরণের চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়া চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি বাজুসের কার্যনির্বাহী সদস্য ওয়াহিদুজ্জামান সুজনের ওপর ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার চেষ্টা হয়, যা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রচেষ্টায় ব্যর্থ হয়।’

বাজুস জানায়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেশের প্রায় ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় ১১টি, সাভারের আশুলিয়ায় ১টি, মুন্সিগঞ্জে ১টি, খুলনায় ৪টি, কুমিল্লায় ১টি, পটুয়াখালীতে ২টি, ময়মনসিংহে ১টি, সিলেটে ১টি ও হবিগঞ্জে ১টি প্রতিষ্ঠানে চুরি ও ডাকাতি সংঘটিত হয়। সাভারের আশুলিয়ায় ডাকাতির সময় ডাকাতদের গুলিতে একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী নিহত হন এবং বনশ্রীতে সোনা ছিনতাইয়ের ঘটনায় একজন জুয়েলারি ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হন। 

গত এক বছরে এই চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় দেশের ২৩টি জুয়েলারি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে।

বাজুস নেতারা বলছেন, এসব ঘটনায় জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিনাতিপাত করছেন। এ জন্য জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারের আলাদা দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সশস্ত্র প্রহরার পাশাপাশি রাজধানীসহ দেশের সব জেলার জুয়েলারি মার্কেটে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানান তারা। 

এ ছাড়া জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই হওয়া অলংকার উদ্ধার এবং অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিও জানানো হয়।

অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা রোধে জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের প্রতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা জোরদারের অনুরোধ জানিয়ে সাতটি নির্দেশনা দিয়েছে বাজুস। এর মধ্যে রয়েছে— নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন-বাজুস সহসভাপতি ও চেয়ারম্যান বাজুস স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এন্টি স্মাগলিং অ্যান্ড ল এনফোর্সমেন্ট মো. রিপনুল হাসান। 

এএইচএস/এমজে

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর