Logo

সারাদেশ

এবার সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে সেই তৃপ্তির বোনের জিডি

Icon

বাংলাদেশের প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০২৫, ২০:৫৪

এবার সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে সেই তৃপ্তির বোনের জিডি

সিকদার লিটন

প্রতারণা ও মামলা বাণিজ্যের হোতা হিসেবে অভিযুক্ত এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মামলার আসামি সিকদার লিটনের বিরুদ্ধে এবার সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তৃপ্তি খানমের বড় বোন মাহমুদা রহমান। প্রতারণা, ষড়যন্ত্র ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানায় তিনি এই জিডি করেন।

জিডিতে অভিযোগ করা হয়, সিকদার লিটন (৪৩) এলাকায় বিভিন্ন প্রতারণামূলক কাজে জড়িত এবং সাধারণ মানুষের ক্ষতি করেন। মাহমুদা বলেন, তৃপ্তির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টায় আছেন সিকদার লিটন। এতে আমার ও আমার পরিবারের সম্মানের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সিকদার লিটনের প্ররোচনায় তৃপ্তি খানম গত ১ মার্চ আমাকে গালিগালাজ ও প্রাণনাশের হুমকি দেন। 

আরও পড়ুন : ‘প্রতারক’ সিকদার লিটনের সঙ্গে তৃপ্তির কীসের সখ্য?

জিডিতে মাহমুদা বলেন, তৃপ্তি খানমকে লোভ দেখিয়ে তাকে দিয়ে সিকদার লিটন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্র্যাইব্যুনালে একজনের বিরুদ্ধে মিথ্যা সিআর মামলা দায়ের করেছেন। লিটন ভবিষ্যতে জানমাল ও সম্মানের ক্ষতি করতে পারেন- এমন আশঙ্কা থেকে মাহমুদা এই জিডি করেছেন বলে উল্লেখ করেন। 

সিকদার লিটন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার চর আজমপুর গ্রামের সিদ্দিক সিকদারের ছেলে। তিনি ঢাকার কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সদস্য। সম্প্রতি তার বিকাশ হিসাব নম্বরে তিনমাসে সাড়ে ২২ লাখ টাকা লেনদেনের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অভিযোগ রয়েছে, তিনি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের প্রতারণা করে আসছিলেন। মামলার ভয় দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। 

সিকদার লিটনকে বুধবার (৫ মার্চ) দুপুরে ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গ্রেপ্তার করে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আলফাডাঙ্গা থানার একটি মামলায় পুলিশ তাকে আদালতে তোলে। ফরিদপুর ৯ নম্বর আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন সুলতানা সুমি তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে তৃপ্তি খানমের (৩২) বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে বিশিষ্ট এক ব্যক্তিকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে মিথ্যা মামলার আবেদন ঠুকে দেওয়ার। ঢাকার নারী ও শিশু আদালতে করা এই মামলার আবেদনে সাক্ষী হিসেবে রাখা হয়েছে সিকদার লিটন ও তার স্ত্রীসহ চারজনকে। যাদের মধ্যে কয়েকজন সাক্ষীই বলেছেন, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন।

তৃপ্তি খানম তার অভিযোগে উল্লেখ করেন, ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি মিরপুরে তিনি ঘটনার শিকার হন। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই দিনগুলোতে তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় ছিলেন। তিনি সেখানকার পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডিউটিরত ছিলেন। হাজিরা খাতায় তার স্বাক্ষরও পাওয়া গেছে। 

এছাড়া, মামলার আবেদনে তৃপ্তি খানম তার যে মোবাইল নম্বর (+৮৮০১৯৭৭২০৬৪...) ব্যবহার করেছেন, তার কল রেকর্ড বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই সময় তিনি ফরিদপুরেই অবস্থান করছিলেন। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আরজিনা বেগমও নিশ্চিত করেন, ওই সময় তৃপ্তি সেখানে কর্মরত ছিলেন।

তৃপ্তি যে ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছেন তিনি অভিযোগ করে বলেন, লিটন ও তৃপ্তি মিলে একটি চক্রের হয়ে কাজ করছেন। তারা সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানহানির পাশাপাশি গুরুতর মিথ্যা অভিযোগ এনে টাকার বিনিময়ে সমাধানের প্রস্তাব দিচ্ছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছর শাসনামলে নিজেকে দলটির দাবি করা লিটন এখন বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন। ডজনখানে জালিয়াতিক মামলার আসামি হওয়ায় গ্রেপ্তার এড়াতে নিয়েছিলেন নানা কৌশল। তার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি ও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। 

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর