ভার্জিনিয়ায় কর ও বিনিয়োগ জালিয়াতি, ব্যবসায়ীর কারাদণ্ড

নিউইয়র্ক প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:১০

যুক্তরাষ্ট্রে সাড়ে ৪ মিলিয়ন ডলারের কর জালিয়াতি ও ওয়ার প্রতারণার অভিযোগে ভার্জিনিয়ার গ্রেট ফলসের ব্যবসায়ী রিক তারিক রহিমকে সাড়ে ৬ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এই রায় ঘোষণা করেছেন বিচার বিভাগের ট্যাক্স ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত উপ-সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কারেন ই. কেলি এবং পূর্ব ভার্জিনিয়ার মার্কিন অ্যাটর্নি এরিক এস. সিবার্ট।
আদালতের নথি ও সাক্ষ্য অনুযায়ী, রহিম বেশ কয়েকটি ব্যবসার মালিক ছিলেন, যার মধ্যে লেজার ট্যাগ সুবিধা ও একটি অ্যামাজন পুনঃবিক্রয় ব্যবসা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২০১৫ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে, রহিম তার কর্মচারীদের বেতন থেকে কেটে রাখা কর আইআরএস-এ জমা দেননি এবং প্রয়োজনীয় ত্রৈমাসিক কর্মসংস্থান কর রিটার্নও দাখিল করেননি। এর ফলে আইআরএসের কমপক্ষে ৪.৪ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
তিনি ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে তার ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্নে তার বিপুল কর বকেয়া থাকার কথা উল্লেখ করেন, কিন্তু পরবর্তীতে মিথ্যা বিবৃতি দিয়ে এসব ঋণ পরিশোধ করেননি। এ ছাড়া রহিম মূল্যবান সম্পদ যেমন হেলিকপ্টার, বেন্টলি, ল্যাম্বরগিনি ও অন্যান্য সম্পত্তি গোপন করেছেন। পরে এসব সম্পত্তি তার স্ত্রীর নামে স্থানান্তর করেন।
রহিম তার ব্যবসার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ব্যক্তিগত খরচ চালান, যা মোট ১.১ মিলিয়নের বেশি নগদ উত্তোলন অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অর্থ উত্তোলনের মাধ্যমে তিনি ব্যাংক লেনদেনের রিপোর্ট এড়ানোর চেষ্টা করছিলেন। ২০১২ সালের পর থেকে তিনি ব্যক্তিগত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি, যদিও তার আয় ছিল ৩৪ মিলিয়ন ডলার।
রহিম তার স্বয়ংক্রিয় ট্রেডিং বট এবং শেয়ার বাজার লেনদেন কপি করার মাধ্যমে গ্রাহকদের প্রতারণা করতেন। তিনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট, যেমন বটসফরওয়েলথ, ট্রেড অটোমেশন, প্রোচার্ট সিগন্যালস, কপিঅ্যান্ডউইন, স্নাইপঅ্যালগো ইত্যাদির মাধ্যমে তার সেবাগুলো প্রচার করতেন। তিনি নিজের বিলাসবহুল জীবনযাত্রা যেমন বড় বাড়ি, সুইমিং পুল এবং ল্যাম্বরগিনির ছবি শেয়ার করে গ্রাহকদের প্রলুব্ধ করতেন। এ ছাড়া তিনি ‘আজীবন সদস্যপদ’ পরিষেবা চালু করে গ্রাহকদের থেকে সাবস্ক্রিপশন ফি আদায় করতেন।
তিনি কমপক্ষে ২০টি ভুয়া ডিসকর্ড প্রোফাইল তৈরি করেন, যেখানে তিনি নিজেই তার পোস্টে প্রশংসাসূচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে গ্রাহকদের আকর্ষণ করতেন। এর মাধ্যমে তিনি ১৩ লাখ ৯৭ হাজার ডলার আয় করেন।
রহিমের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করেছে আইআরএস ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন বিভাগ ও এফবিআই। আদালত তাকে সাড়ে ৬ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করেছেন এবং ১.৩ মিলিয়ন ডলার বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া রহিমকে আইআরএস এবং তার প্রতারিত বিনিয়োগকারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
- কেই/এমজে