Logo

আন্তর্জাতিক

ভিডিও

গাজায় ১৫ লাখ বইয়ের পাঠাগার ধ্বংস করল ইসরায়েল

Icon

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৯:১০

গাজায় ১৫ লাখ বইয়ের পাঠাগার ধ্বংস করল ইসরায়েল

গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় এ পর্যন্ত অনেকগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ কিংবা আংশিকভাবে ধ্বংসাবশেষে পরিণত হয়েছে। এই হামলার সর্বশেষ শিকার শহরটির ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার। ১৫ লাখ বই সমৃদ্ধ এই পাঠাগারটিকে বোমা হামলা করে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

রোববার (৬ এপ্রিল) আলজাজিরা মুবাশির এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ধ্বংসাবশেষে পরিণত হওয়া এ পাঠাগারে ১৫ লাখ বইয়ের পাশাপাশি অসংখ্য একাডেমিক রেফারেন্সও ছিল।

এই পাঠাগারে জীবনের দীর্ঘ একটি সময় অতিবাহিত করা গাজার গবেষক মোহাম্মদ শাহাদাহ বলেন, ‘আজ আমি এসেছি আমার সেই প্রিয় গ্রন্থাগারটি খুঁজতে, যেখানে আমি বছরের পর বছর গবেষণা করেছি। এক সময় যেখানে ১৫ লক্ষাধিক বই ছিল, এখন তার কোনো চিহ্নই নেই।’

ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব গাজার এই পাঠাগারটি গবেষণা ও পড়াশোনার জন্য গাজা উপত্যকার শিক্ষার্থী ও গবেষকদের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। গুরুত্বপূর্ণ এই স্থাপনাটির অবস্থা বর্ণনা করে মোহাম্মদ শাহাদাহ বলেন, ‘গ্রন্থাগারের সব বই ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে গেছে। কিছু বই আগুন জ্বালানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, আবার কিছু বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে পড়েছে। এগুলো আর পড়ার উপযোগী নেই। এই অবস্থা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গাজা সব সময়ই জ্ঞান ও বিদ্বানদের শহর ছিল। পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন, গাজা জ্ঞানীদের জন্ম দিয়ে যাবে। তবে এই ধ্বংস পুনর্গঠনে বহু বছর, এমনকি দশকও লেগে যেতে পারে।’

প্রতিষ্ঠানটির প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী মুসা আবু দিরাবি (২৫) বলেন, ‘আমি বন্ধুদের সঙ্গে বেশিরভাগ সময় এই পাঠাগারেই কাটাতাম।’ অভিযোগের সুরে তিনি বলেন, ‘কিন্তু পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, গ্যাস সংকটের কারণে শরণার্থীরা রান্নার জন্য এখানকার বই পুড়িয়ে আগুন জ্বালাতে বাধ্য হয়েছে।’

ইসরায়েলি বাহিনীর ১৮ মাসব্যাপী চলমান গণহত্যামূলক যুদ্ধের ফলে গাজার শিক্ষা খাত ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়েছে। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, প্রায় ১৪০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়। আংশিক ক্ষতির মুখে পড়েছে প্রায় ৩৬০টি প্রতিষ্ঠান।

মানবিক দিক থেকেও এখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ। এই যুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার শিক্ষার্থী এবং প্রায় ৭৬০ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়াও প্রায় ১৫০ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও গবেষক নিহত হয়েছেন, যা গাজার উচ্চশিক্ষার ভবিষ্যতের জন্য বড় ধাক্কা।

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ৭ লাখ ৮৫ হাজার শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। কারণ তাদের স্কুলগুলো এখন শরণার্থীদের আশ্রয়কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

ভিডিও দেখতে এখানে ক্লিক করুন

সূত্র : আলজাজিরা মুবাশির

ডিআর/বিএইচ

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর