যুক্তরাষ্ট্রের ছত্রছায়ায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে : হেফাজতে ইসলাম

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৮:১৭
-67f3c2732ab26.jpg)
গাজায় দখলদার ইসরায়েলের সন্ত্রাসী তাণ্ডব, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনবাসীর ডাকা বৈশ্বিক হরতালের প্রতি সংহতি জানিয়ে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পল্টন জোন এক সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সেক্রেটারি আল্লামা মুহাম্মাদ মামুনুল হক বলেন, ফিলিস্তিন আজ একটি কবরখানায় পরিণত হয়েছে। অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল গাজায় যে গণহত্যা চালাচ্ছে, তা ইতিহাসের সমস্ত নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে। এই জুলুমের নেপথ্য কারিগর হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের প্রত্যক্ষ সমর্থন ও অস্ত্রসজ্জায় ইসরায়েল বারবার ফিলিস্তিনিদের রক্তে হোলি খেলছে। যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে মানবাধিকারের রক্ষাকর্তা দাবি করলেও আজ তাদের মুখোশ খুলে গেছে— তারা জায়োনিস্ট সন্ত্রাসের পৃষ্ঠপোষক।
মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পল্টন জোন সভাপতি ও দিলু রোড মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি সালাউদ্দীন এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী। সভায় মামুনুল হক আরও বলেন, ইসরায়েল শুধু একটি অবৈধ রাষ্ট্র নয়’ বরং মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি ক্যান্সার। এ ক্যান্সারের মূলোৎপাটন এখন সময়ের দাবি। ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা মুসলিম উম্মাহর ওপর ফরজ হয়ে গেছে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াই ছাড়া মুক্তি নেই।
সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন— হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আহমাদ আলী কাসেমী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, অর্থ সম্পাদক মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি হাবিবুল্লাহ মাহমুদ কাসেমী, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, মাওলানা হোসাইন আকন্দ, মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসউদ খান, মাওলানা হাকীম আজহারুল ইসলাম নোমানী প্রমুখ।
হেফাজত নেতারা বলেন, ফিলিস্তিন কেবল ইতিহাস নয়; এটি মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের স্পন্দন। এই ভূমিকে আল্লাহ পবিত্র আখ্যা দিয়েছেন। এখান থেকেই নবীজি (সা.)-এর ইসরা ও মেরাজ শুরু হয়েছিল। এই মোবারক ভূমিকে ধ্বংস করতে ইসরাইল যতই চেষ্টা করুক, সফল হবে না।
তারা বলেন, ইহুদিদের দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে মুসলিম উম্মাহর প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে। রাসুল (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন— একদিন মুসলমানদের একটি দল এই দখলদারদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং বিজয়ী হবে। ইনশাআল্লাহ, সেই দিন আর বেশি দূরে নয়। ফিলিস্তিন হবে বিজয়ীদের ভূমি, আর ইসরায়েলের কবরও সেখানেই রচিত হবে। এ সময় বক্তারা বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে ইসরায়েল ও তার মিত্র সকল রাষ্ট্রের পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান।
ভারতের প্রসঙ্গে বক্তারা আরও বলেন, ‘ভারতের হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার একের পর এক মুসলিমবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে। ওয়াকফ সম্পত্তি আইনের সংশোধনের মাধ্যমে দেশটির মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা ও এতিমখানাগুলোর ওিপর দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।’ হেফাজতে নেতারা এরও তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং মুসলিম নিপীড়নের বিরুদ্ধে ভারতের বিরুদ্ধেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন।
ডিআর/বিএইচ