মির্জা ফখরুল
ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন, এটা অস্পষ্ট কথা

বাংলাদেশের প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৬ মার্চ ২০২৫, ১৩:৫৫

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ডিসেম্বর থেকে জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন হবে, এটা অত্যন্ত অস্পষ্ট কথা। ডিসেম্বর থেকে জুন .. ছয় মাস। সুতরাং এটা কোনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ নয়।’
বুধবার (২৬ মার্চ) সকালে শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের পরে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার দেয়া ভাষণের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা বারবার বলে আসছি, স্পষ্ট রোডম্যাপ এবং দ্রুত নির্বাচন। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে সেই সংকটগুলো কাটবে না।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার স্বার্থেই নির্বাচনের কথা বলছে। নির্বাচিত পার্লামেন্ট ও সরকারের কথা বলছে। তাই আমরা আশা করব, অন্তবর্তীকালীন সরকার অতি দ্রুত ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে অর্থাৎ যেগুলো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন তা সম্পন্ন করে নির্বাচনের ঘোষণা দেবেন।
সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী শেরেবাংলা নগরে শহীদ রাষ্ট্রপতি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে আসেন। শহীদ নেতার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তারা ফাতেহা পাঠ করেন।
এ সময়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ নেতারা ছিলেন।
পরে জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন নেতারা।
এছাড়া মহানগর বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকেও আলাদা আলাদাভাবে নেতা-কর্মীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানায়।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণ করে বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি অত্যন্ত হতাশ হয়েছি, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন সেখানে স্বাধীনতার ঘোষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম একবারও উচ্চারণ করেননি। অথচ এটাই ছিল ইতিহাস।
তিনি বলেন, আমরা আবারও চাই না, আওয়ামী লীগ যে ইতিহাস বিকৃত করেছে এখন আবার তাই হোক। প্রকৃত সত্যকে উদঘাটিত করে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা একটি গণতান্ত্রিক সরকার সেই গণতান্ত্রিক সরকারে যত দ্রুত ফিরে যাওয়া যাবে আমাদের সমস্যাগুলো ততই সমাধান হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
স্বাধীনতা দিবসে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই দিনে আমাদের দলের পক্ষ থেকে, আমাদের দলের চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আমরা গোটা জাতিকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং প্রত্যাশা করছি অতি শিগগিরই আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরে পাব।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের জন্য প্রাণ বিসর্জনকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি বলেন, এই স্বাধীনতার জন্য আমাদের লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, আমাদের অসংখ্য মা-বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছে, কোটি মানুষ তাদের প্রিয়জন হারিয়েছে এবং অসংখ্য ত্যাগ-তিতীক্ষার বিনিময়ে আমরা এই স্বাধীনতা অর্জন করেছি। যে ৫৪ বছর আগে আমরা স্বাধীন হয়েছি, দুর্ভাগ্যের কথা তখন যে লক্ষ্য ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে সামনে নিয়ে, যে চেতনাকে ধারণ করে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম... একটা মুক্ত, স্বাধীন, সার্বভৌম গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ আমরা এখন পর্যন্ত পুরোপুরি অর্জন করতে সক্ষম হইনি।
ডিআর/ওএফ