Logo

ধর্ম

কত টাকা থাকলে জাকাত দিতে হবে

বেলায়েত হুসাইন

বেলায়েত হুসাইন

প্রকাশ: ২০ মার্চ ২০২৫, ১৪:২০

কত টাকা থাকলে জাকাত দিতে হবে

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি জাকাত। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইসলামের ভিত্তি পাঁচটি বিষয়ের ওপর। এই কথার সাক্ষ্য দেওয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোনও উপাস্য নেই এবং মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল, নামাজ প্রতিষ্ঠা করা, জাকাত আদায় করা, হজ করা ও রমজান মাসে রোজা রাখা।’ 

জাকাত ফরজ হয় স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক এমন মুসলিম নর-নারীর ওপর, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ এক বছর অতিবাহিত হবে। নিসাব হলো- নিত্যদিনের প্রয়োজন পূরণ এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বাদ দেওয়ার পর সাড়ে ৫২ তোলা পরিমাণ (৬১২ দশমিক ৩৬ গ্রাম) রুপা অথবা সাড়ে সাত তোলা (৮৭ দশমিক ৪৮ গ্রাম) পরিমাণ স্বর্ণ থাকা অথবা এর সমমূল্যের ব্যবসার মালের মালিক হওয়া।

জাকাত প্রযোজ্য হয়- এমন প্রধান প্রধান সম্পদগুলো হলো- স্বর্ণ ও রুপা, গবাদিপশু ও সবধরনের বাণিজ্যিক পণ্য। দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও ব্যবসায়িক পণ্যের নিসাব নির্ধারণে সোনা-রুপা হলো পরিমাপক। এ ক্ষেত্রে ফকির-মিসকিন ও দরিদ্রদের জন্য যেটি বেশি লাভজনক হবে, সেটিকে পরিমাপক হিসেবে গ্রহণ করাই শরিয়তের নির্দেশ।

তাই মুদ্রা ও পণ্যের বেলায় বর্তমানে রুপার (২২ ক্যারেট বারের মূল্য) নিসাবই পরিমাপক হিসেবে গণ্য হবে। তাই যার কাছে ৫২ দশমিক ৫ তোলা (৬১২ দশমিক ১৫ গ্রাম) রুপা বা সমমূল্যের নগদ অর্থ, নগদ অর্থের সাথে স্বর্ণ, বন্ড, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, ব্যাংকে জমা করা যে কোনো ধরনের টাকা ফিক্সড ডিপোজিট হলে মূল জমা টাকা অথবা সমমূল্যের ব্যবসার পণ্য থাকলে জাকাত আদায় করতে হবে।

এ পরিস্থিতিতে চলতি বছর জাকাতের পরিমাণ কত হবে, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে ‘শারীয়াহ এ্যাডভাইজারি অ্যান্ড রিসার্চ কাউন্সিল’ (এসএআরসি)। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান বরেণ্য ইসলামি অর্থনীতিবিদ মুফতি মাসুম বিল্লাহ বাংলাদেশের খবরকে জানিয়েছেন, ‘আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রুপার পাইকারি বিক্রয় মূল্য যাচাই করে ১৬০০-১৭৫০ টাকা দর পেয়েছি। এই দরগুলোর গড় মধ্যম মূল্য ১৬৮০ টাকা ধরে ৫২.৫ তোলা/ভরি রুপার পাইকারি বিক্রয় মূল্য ৮৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। উল্লেখিত দর হিসেবে মোট মূল্য ৮৮ হাজার ২০০ টাকা হয়, কিন্তু হিসাবের সুবিধার্থে ২০০ টাকা বাদ দিয়ে ৮৮ হাজার টাকা ধার্য করা হয়েছে।’ আর মনে রাখতে হবে যে, জাকাতের হিসাবের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পাইকারি বাজার মূল্য ধর্তব্য।

সুতরাং এক বছর অতিবাহিত হলে এই পরিমাণ সম্পদের ওপর তার ৪০ ভাগের এক ভাগ (২ দশমিক ৫০ শতাংশ) জাকাত দিতে হবে। শতকরা আড়াই টাকা বা হাজারে ২৫ টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় বা অন্য কোনও প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে।

জাকাত মূলত হিজরি বা চান্দ্রবছরের হিসাব করে দিতে হয়; আর হিজরি বা চান্দ্র বছর ৩৫৪ দিনে হয়। এই ৩৫৪ দিনের হিসাবে দিলে ২ দশমিক ৫ শতাংশ আর যদি সৌরবছর ৩৬৫ দিনের হিসাবে ২ দশমিক ৬ শতাংশ জাকাত দিতে হবে।

কেউ যদি হিজরি বা চান্দ্র বছর হিসাব করতে না পারে বা ইংরেজি বা সৌরবছর হিসাবে দিতে চায়, তাহলে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ কিংবা সতর্কতামূলক ২ দশমিক ৬ শতাংশ দিতে হবে। কারণ সেক্ষেত্রে ১০-১২ দিন বেশি হয়ে যায়। আর ওই বেশি দিনগুলোর জাকাতের পরিমাণ হয় ০ দশমিক ০৭ শতাংশ থেকে ০ দশমিক ০৭৫ শতাংশ, সতর্কতামূলক ০ দশমিক ১ শতাংশ বৃদ্ধি করা ভালো।

তথসূত্র : আবু দাউদ, হাদিস : ১৫৭২; সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৬২৩; সহিহ বুখারি, হাদিস : ৮

ডিআর/বিএইচ

প্রাসঙ্গিক সংবাদ পড়তে নিচের ট্যাগে ক্লিক করুন

জাকাত ইসলাম

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর