Logo

ধর্ম

স্বপ্নে তোমাকে চাই হে নবিজি

আবু তালহা রায়হান

আবু তালহা রায়হান

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩:৪৩

স্বপ্নে তোমাকে চাই হে নবিজি

নীরব-নিস্তব্ধ রাতে পৃথিবী যখন প্রকৃতির কোলে মাথা গুঁজে প্রশান্তি খুঁজে, তখন আমি স্বপ্নে তাঁকে খোঁজি। মরুর বুকে তৃষ্ণার্ত পথিক যেমন অধীর আগ্রহে একফোঁটা জল খুঁজে—আমি তেমনই পিপাষিত হৃদয়ে তাঁকে খোঁজি। ঝিঁঝিপোকার মনমাতানো সুর, ছন্দে দোলিত হয়ে প্রচণ্ড শীতের রাতেও কবিরা যখন প্রেয়সী প্রেমের কবিতা লেখে, আমি তখন শুদ্ধতার ওজু করি, জায়নামাজে বসে দরুদ পড়ে প্রেম নিবেদন করি তাঁর নামে। জিকির করে রবের কাছে ভিখারি বেশে প্রার্থনা জানাই, মাবুদ! তোমার প্রিয় হাবিব (সা.)-এর দিদার চাই। 

যার প্রেমে দেওয়ানা বিশ্বজাহান। যার জন্যে সৃজিত এ নিখিলধরা। যাকে ভালোবেসে জীবন বিলিয়েছিলেন সিদ্দিকে আকবর (রা.), আমিরুল মুমিনীন (রা.)- এর মত বিশ্ব লিডাররা। যার পরশে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, খুন, ধর্ষণ, অন্যায়-অবিচারসহ যাবতীয় কুসংস্কৃতি-কুনীতি বিদূরিত। যিনি আঁধারের ঘোর কাটিয়ে প্রভাতরাঙা সূর্য হয়ে পৃথিবীর বুকে আগমন করেছিলেন, খুব যতন করে গোবরেও পদ্মফুলের জন্ম দিয়েছিলেন। যিনি ছিলেন রাহমাতুল্লিল আলামিন, মানবতার প্রবর্তক। প্রভাতশিশিরের চেয়েও বেশি সফেদ এবং পবিত্র ছিল যার চরিত্র। সততা এবং উদারতায় যিনি জগতের শ্রেষ্ঠ উপমা।

যিনি (ফেরেশতাদের প্রস্তাবিত হাদিয়া) উহুদ পাহাড়সম স্বর্ণসম্পদ রেখেও আমরণ গরিবি জীবনযাপন করেছেন। তালিযুক্ত কাপড় পরেছেন। হাসিমুখে মাত্র একপেয়ালা দুধ ভাগ করে খেয়েছেন ৭০জনকে নিয়ে। সাদা-কালো, ধনী-গরিব সবাইকে একচোখে, একমনে কাছে টেনেছেন। জগতের শ্রেষ্ঠমানব হয়েও যিনি দাম্ভিকতা থেকে নিজেকে পরিত্রাণ রেখেছিলেন, একবারের জন্য হলেও আমি তাঁকে দেখতে চাই।

বর্বর কাফেররাও যার প্রেমে ডুবে ছিল, কেবল মানুষই নয় বনের পশু-পাখিদের হৃদয়েও যার বসবাস, পৃথিবীর সর্বোচ্চ খেতাব ‘আল-আমিনে’ যিনি ভূষিত— আমি তাঁর কানে কানে বলতে চাই, ওগো প্রিয় নবি, ভালোবাসি তোমাকে। ভালোবাসি আমার জীবনের চেয়েও বেশি। তাঁর মোবারক হাত-পা, চাঁদমুখ— আমি সব ছুঁতে চাই, শীতল করতে চাই তাঁর প্রেমে দগ্ধ আমার হৃদয়টাকে।

যে হৃদয়ে কেবল তাঁর-ই নাম লেখা, তাঁরই ছবি আঁকা। আসমান-জমিনের সব সৌন্দর্য যাঁর জন্যে, আমি তাঁকে দেখতে চাই। তাঁকে আলিঙ্গন করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে চাই। ইয়াউমুল মাহশারের কঠিন মুহূর্তে ছেলে ভুলে যাবে প্রাণাধিক প্রিয় বাবাকে, মা ভুলে যাবে কলিজার টুকরো সন্তানকে, স্বামী ভুলে যাবে প্রিয়তমা স্ত্রীকে, সবাই কেবল আপনা চিন্তায় ব্যতিব্যস্ত থাকবে। দিশেহারা হয়ে একটু সুপারিশের জন্য মানুষ হজরত আদম (আ.)-এর কাছে যাবে । তারপর যাবে ইবরাহিম (আ.)-এর কাছে, এবং যাবে মুসা (আ.)-এর কাছেও—একে একে সবাই ফিরিয়ে দেবেন। কেউ সুপারিশের সাহস পাবেন না। 

তখন যিনি মুক্তিরবাহক হয়ে দিশেহারা মানুষের পাশে দাঁড়াবেন, কঠিন ময়দানেও প্রভুর পায়ে চুমু খেয়ে উম্মাহর মুক্তির জন্য কাঁদবেন, সেই মহামানবের দিদার পেতে চাই আমি। তাঁর জুতো মোবারক মাথায় তুলে রাখতে চাই। আমার প্রতিটা রাতে, প্রতিটা স্বপ্নে কেবল তাঁকেই চাই। জীবন এবং যৌবন তাঁর নামে উৎসর্গ করতে চাই! ভালোবাসি, ভালোবাসি এবং বাসি হে প্রাণের ছবি বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। একবার হলেও স্বপ্নে এসে পাপিষ্ঠ এ উম্মতকে ধন্য কর, মিটিয়ে দাও সমূহ অন্তরজ্বালা...

লেখক : সহসম্পাদক, বাংলাদেশের খবর

এটিআর/

Logo
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মোস্তফা কামাল মহীউদ্দীন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন প্রধান, ডিজিটাল সংস্করণ হাসনাত কাদীর