বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
‘রাজনীতিতে সংকটের ছায়া’

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৫, ০৯:৪৪

প্রথম আলো প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ইসরায়েলবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ’
জেরুজালেমে নেতানিয়াহুবিরোধী বিক্ষোভ। গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে বিভিন্ন দেশে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েল স্বৈরতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা খুবই উদ্বেগের। তারা (সরকার) জিম্মিদের পাশে নেই। দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তোয়াক্কা করছে না।’ কথাগুলো বলছিলেন ৫৯ বছর বয়সী রিনাত হাতাশি। শুক্রবার জেরুজালেমে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেন এই ইসরায়েলি। এদিন ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে দেশে দেশে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে।
গাজায় যুদ্ধবিরতি অব্যাহত রাখা, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হাতে বন্দী থাকা বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা এবং ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেতের প্রধান রোনেন বারকে বরখাস্ত করার প্রতিবাদে কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলে বিক্ষোভ করছেন দেশটির হাজার হাজার নাগরিক। তাঁদের মূল ক্ষোভ প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।
এ বিক্ষোভের অংশ হিসেবে গতকাল জেরুজালেমে নেতানিয়াহুর বাসভবনের বাইরে অবস্থান নেন বহু মানুষ। তাঁদের হাতে ছিল ইসরায়েলের পতাকা ও সরকারের সমালোচনা করে লেখা প্ল্যাকার্ড। পশ্চিম জেরুজালেমে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মাইকেল হালপেরিন বলেন, শিন বেতের বদলে প্রধানমন্ত্রীকে এখন গাজায় মৃত্যুর মুখে থাকা বাকি জিম্মিদের ফিরিয়ে আনার দিকে নজর দেওয়া উচিত।
কালের কণ্ঠ প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘হঠাৎ রাজনীতি উত্তাল, জনমনে উদ্বেগ’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের এই বক্তব্য ঘিরে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই বক্তব্যের পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন দল ও মহলের অবস্থানে রাজনৈতিক অঙ্গনে হঠাৎ তোলপাড় শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। দেশ আবার সংঘাতময় হয়ে উঠে কি না, তা নিয়ে শঙ্কিত দেশের জনগণ।
প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যের পর জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ অনেক রাজনৈতিক দলে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তারা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে স্পষ্ট করে কিছু বলেনি। বরং তাদের বক্তব্যে মনে হয়েছে, কোনো বিশেষ কারণে দুই দলই সরকারকে রুষ্ট করতে চাইছে না।
উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শুক্রবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান—দুজনই কৌশলে বলেছেন, তাঁরা দেশে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন চান না।
অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করতে হবে এবং এই মাফিয়াগোষ্ঠীর রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টাকে প্রতিহত করা হবে।
আজকের পত্রিকা প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘রাজনীতিতে সংকটের ছায়া’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই অভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আওয়ামী লীগের বিচারের দাবি জোরালো হচ্ছিল। সেই সময়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার পরিকল্পনা সরকারের নেই জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া বক্তব্য ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠ।
আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে—এমন আশঙ্কা থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকেও জড়িয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণেরা। এ পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য না এলে রাজনীতিতে নতুন সংকটের ছায়া দেখছেন বিশ্লেষকেরা।
রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসানের পর পরিস্থিতি থিতিয়ে আসতে সময় চলে গেছে প্রায় সাত মাস। এখন চলছে রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ। জাতীয় সংসদ, গণপরিষদ, নাকি স্থানীয় সরকার নির্বাচন—কোনটি আগে হবে, তা নিয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ পুরোনো দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ আছে। আর তরুণদের নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মূল চাওয়া —গণহত্যাকারী দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য আগে গণপরিষদ নির্বাচন অথবা একই সঙ্গে গণপরিষদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংস্কার প্রশ্নে দলগুলোর মধ্যে এমন মতবিরোধের মধ্যেই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি রাজনীতিতে নতুন ইস্যু হয়ে উঠেছে।
সমকাল প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ঢাকার ফুটপাতে চাঁদাবাজি সচল, কুশীলব বদল’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পর শূন্যের ঘরে নেমে এসেছিল রাজধানীর ফুটপাতের চাঁদাবাজি। সুসময় টেকেনি বেশি দিন। আবারও চাঁদাবাজরা ফিরেছে পুরোনো চেহারায়। আগের চেয়ে বরং ফুটপাত-রাজপথে বেড়েছে হকার। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে চাঁদার অঙ্ক। কোথাও কোথাও এসেছে নতুন চাঁদাবাজ।
অনেক এলাকায় আওয়ামী লীগের বদলে চাঁদাবাজের তালিকায় উঠেছে বিএনপি নেতাকর্মীর নাম। চাঁদাবাজির হোতা হিসেবে রাজধানীর দুয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসীর নামও সামনে আসছে। কোনো এলাকায় বদল হয়েছে লাইনম্যানের। তবে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ আগের চেয়ে অনেকটাই কম।
রাজধানীর ফুটপাত হকারমুক্ত করতে অতীতে কম চেষ্টা হয়নি। ২০১৬ সালের অক্টোবরে গুলিস্তানকে হকারমুক্ত করার অভিযানে নেমে নিজেই বিপাকে পড়েছিলেন ঢাকা দক্ষিণের তৎকালীন মেয়র সাঈদ খোকন। তখন হকাররা উল্টো নগর ভবন ঘিরে হামলা চালান। এর পরই গতি হারায় হকার উচ্ছেদ কার্যক্রম। পরে ব্যারিস্টার তাপস মেয়র হলে রাস্তায় হকার ঠেকাতে লাল-হলুদ-সবুজ রঙে মার্কিং করে দেন। সেটাও কাজে দেয়নি। সর্বশেষ গণঅভ্যুত্থানের পর যৌথ বাহিনী কয়েক দিন ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করলেও এখন আবার রকমারি পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছেন হকাররা।
যুগান্তর প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘আ.লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবি / লাগাতার কর্মসূচি এনসিপির’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণ-আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে ভারতে বসে নানারকম ষড়যন্ত্র করছেন শেখ হাসিনা ও দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীরা। তারা দেশকে অস্থিতিশীল ও নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। গণ-অভ্যুত্থানের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের প্রধান শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের দৃশ্যমান বিচার শুরু না হওয়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে দলটি।
এমন বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির নিবন্ধন বাতিল ও নিষিদ্ধের দাবিতে লাগাতর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। শুক্রবার রাত ৮টায় রাজধানীর বাংলামটরে রূপায়ণ টওয়ারে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। এর আগে সূচনা বক্তব্য দেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই-প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা জানান। তিনি বিচার অনিষ্পন্ন রেখে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। দল হিসাবে আ.লীগ সাংগঠনিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে গণহত্যা চালিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক দল নয় বরং ফ্যাসিবাদী দল নিষিদ্ধ থাকবে। তিনি গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী খুনিদের বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভের ঘোষণা দেন দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
নয়া দিগন্ত প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘হাসিনাসহ আ’লীগের দেড় শতাধিক মন্ত্রী-এমপি দুদকের মামলাজালে’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যসহ দেড় শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রভাবশালীদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্য, সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ছাড়াও কয়েকজন আমলা রয়েছেন। গত সাত মাসে এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে। দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবারও অর্থ আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা সাবেক মন্ত্রী আমির হোসেন আমু ও তার পবিবারের বিরুদ্ধে তিনটি এবং শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক।
মামলার বিষয়ে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো: আক্তার হোসেন বলেন, প্রতিটি মামলারই দুদকের বিধি বা আইন অনুযায়ী যথাসময় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, শেখ হাসিনাসহ আড়াই শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকের তদন্ত কার্যক্রম চলমান। অনেকের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শেষে মামলা করা হয়েছে, বাকিদের বিরুদ্ধেও মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ডিআর/এমবি