বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
গণপরিষদ নয়, সংসদ নির্বাচন চায় বিএনপি

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০২৫, ০৯:৫৬

প্রথম আলো প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘গণপরিষদ নয়, সংসদ নির্বাচন চায় বিএনপি’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কারে গণপরিষদ গঠন করার কোনো প্রয়োজন নেই বলে মনে করে বিএনপি। দলটি বলেছে, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা উচিত। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠা হলে সংসদে সব আলোচনা হবে।
গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে সংস্কারের সুপারিশ নিয়ে লিখিতভাবে দলীয় মতামত জমা দেয় বিএনপি। পরে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ সাংবাদিকদের দলীয় এ অবস্থানের কথা তুলে ধরেন।
সংবিধানের প্রস্তাব পরিবর্তনে সংস্কার কমিশনের সুপারিশের বিরোধিতাও করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, সুপারিশে ১৯৭১ ও ২০২৪ সালকে এককাতারে আনা হয়েছে। এটি তারা সমুচিত বলে মনে করে না। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তন করার প্রয়োজন আছে বলেও মনে করে না দলটি। বিএনপি বলেছে, যেভাবে সাংবিধানিক কাউন্সিল গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছে, তাতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের তেমন একটা ভূমিকা থাকবে না। এ ছাড়া নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হবে।
কালের কণ্ঠ প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর প্রতি আক্রমণাত্মক কথা না বলার আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বলেছিলেন, ‘একটা কমন জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছি, সেনাবাহিনী এবং সেনাপ্রধানের প্রতি বিদ্বেষ কারো কারো। কিন্তু কী কারণে, আজ পর্যন্ত আমি এটা খুঁজে পাইনি।’
ওই দিন সেনাপ্রধান আরো বলেন, ‘আমরা হচ্ছি একমাত্র ফোর্স, যেটা আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, দাঁড়িয়ে আছি প্ল্যাটফরমে। অবকোর্স নেভি অ্যান্ড এয়ারফোর্স। নেভি, এয়ারফোর্স উই অল। আমাদের সাহায্য করেন, আমাদের আক্রমণ করবেন না। আমাদের অনুপ্রাণিত করেন, আমাদের উপদেশ দেন। আমাদের প্রতি আক্রমণ করবেন না। উপদেশ দেন, আমরা অবশ্যই ভালো উপদেশ গ্রহণ করব। আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই এবং দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’
কিন্তু সেনাপ্রধানের সেই অনুরোধেও ঐক্য বিনষ্টকারীদের অপচেষ্টা থামেনি। কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট বেশ কিছু দিন ধরেই সেনাপ্রধান সম্পর্কে কটূক্তি ও অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে।
মানবজমিন প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘ঐকমত্যের সুপারিশে নানা দ্বিমত’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছয়টি বিষয়ে গঠিত সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মতামত জমা দিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। গতকাল বিএনপি ও এনসিপি তাদের মতামত জমা দিয়েছে। এসব মতামতে বিভিন্ন বিষয়ে একমতের সঙ্গে এসেছে নানা বিষয়ে ভিন্নমত। এ ছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে দলগুলোর পক্ষ থেকে বিপরীতধর্মী মতামতও এসেছে। দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট সংসদ এবং সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয়ে দলগুলো ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছে।
সব দলের মতামত পাওয়ার পর তা পর্যালোচনা করে জাতীয় ঐকমত্যের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে এ সংক্রান্ত কমিশন। গতকাল জমা দেয়া দলীয় মতামতে বেশ কিছু বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করেছে বিএনপি। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ১৯৭১ সাল এবং ২০২৪ সালকে এক কাতারে আনার বিষয়ে বিএনপি ভিন্নমত পোষণ করেছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবেও সায় দেয়নি দলটি। বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে প্রায় সব প্রস্তাবে বিএনপি একমত। ৩১ দফা সুপারিশের মধ্যে চার-পাঁচটি বিষয়ে মতামত দেয়া হয়েছে। বিএনপি বলছে, অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংশোধনী দিয়ে নির্বাচন কমিশনের হাতে ডিলিমিটেশনের এখতিয়ার রাখা হোক। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার নিয়ে ২০টি সুপারিশের ১১টিতে একমত দলটি। একটি প্রস্তাবে মন্তব্যসহ ভিন্নমত পোষণ করেছে দলটি। প্রশাসন সংস্কারে প্রায় অর্ধেক প্রস্তাবে একমত বিএনপি। ২৬টি প্রস্তাবনার মধ্যে অর্ধেকে নিজস্ব মতামত দিয়েছে দলটি।
এদিকে ৫টি বিষয়ের ওপর সংস্কার প্রস্তাব জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। সংবিধানের মূলনীতিতে আল্লাহর প্রতি অবিচল ঈমান-আস্থা ফিরিয়ে আনতে মত দিয়েছে জামায়াত। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সংস্কার প্রস্তাব জমা দেয়া হয়। দলটি সংবিধান, জনপ্রশাসন, বিচার বিভাগ, নির্বাচন প্রক্রিয়া ও দুর্নীতি দমন কমিশনের বিষয়ে কিছু পয়েন্টে দ্বিমত করেছে। দলটি বলছে, নির্বাচন কমিশনের যারা কর্মকর্তা, রিটার্নিং ও প্রিজাইডিং অফিসার যারা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ থাকতে পারেন না তাদের এড়াতে বলা হয়েছে। দলটি পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়। সংবিধানে সাম্য, গণতন্ত্র, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়েছে জামায়াত। ন্যাশনাল কনস্টিটিউশনাল কাউন্সিলের সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত নয় দলটি। দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের সঙ্গে একমত হলেও পুরাপুরি একমত নয় দলটি। তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত মতামত দিয়েছে।
আজকের পত্রিকা প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘নতুন বাহিনীর প্রস্তাবে অসন্তোষ বেবিচকে’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা জোরদারে ‘বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স’ (বিএএসএফ) নামে একটি বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই বাহিনীর সদস্য সংখ্যা হবে ১০,৬৩২ জন। প্রস্তাব অনুযায়ী, এই জনবলের ৭০ শতাংশ নেওয়া হবে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী থেকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) নতুন এই বাহিনী গঠনসংক্রান্ত প্রস্তাব বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। এ নিয়ে বেবিচকের ভেতরেই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। প্রস্তাবটি বাতিল এবং বেবিচকের এভিয়েশন সিকিউরিটি (এভসেক) বিভাগের স্বার্থ সংরক্ষণের দাবিতে বেবিচকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, বেবিচককে দুর্বল করার চেষ্টা চলছে। বিক্ষোভের পর বেবিচক বলেছে, এখন পর্যন্ত এমন কোনো প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি।
সূত্র জানায়, বিএএসএফ গঠনের প্রস্তাব অনুযায়ী, দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোতে এই বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। এটি থাকবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনে। বাহিনীটি পরিচালিত হবে বেবিচকের চেয়ারম্যানের তত্ত্বাবধানে। নতুন এই বাহিনী গঠনের প্রাথমিক বাজেট ধরা হয়েছে ৩৯৭ কোটি ২ লাখ টাকা।
নয়া দিগন্ত প্রধান শিরোনাম করেছে, ‘পায়রা সমুদ্রবন্দর প্রকল্প অর্থনীতির বিষফোঁড়া’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পায়রা সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনাল প্রকল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য বিষফোঁড়া। পায়রা সমুদ্রবন্দর বলা হলেও মূলত একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা আনতে এই বন্দর করা হচ্ছে। এটাকে সমুদ্রবন্দর তো দূরের কথা, নদীবন্দরও বলা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, এ প্রকল্পের জন্য প্রতি বছর ড্রেজিং করতে হবে। এতে প্রচুর অর্থ খরচ হবে। এটি বাদ দিয়ে প্লেনে কয়লা আনা যায়।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধান উপদেষ্টা এবং একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এই অনুমোদন দেয়া হয়। সভাশেষে আনুষ্ঠানিক এক ব্রিফিংয়ে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে সাংবাদিকদেরকে জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ ও পরিকল্পনা সচিব। উপদেষ্টা জানান, ১৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ১৩৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১৪ হাজার ১৯৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণ ছয় হাজার ৫৩৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৪০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, যা হোক, ভুল প্রকল্প হলেও অনেক কাজ হয়েছে, অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তাই বাধ্য হয়েই শেষ করতে হবে। তিনি বলেন, বাণিজ্য উপদেষ্টা তো বলেছিলেন নদীর নাব্য হিসেবে এটাকে ঘাট বলা যায়।
যুগান্তর প্রধান শিরোনাম করেছে, গণভোট ও গণপরিষদে ‘না’
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে গণভোট, গণপরিষদ নির্বাচন ও রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের সঙ্গে একমত পোষণ করেনি বিএনপি। সংবিধান সংশোধন করা যেতে পারে উল্লেখ করে দলটি বলেছে, এক্ষেত্রে মূলনীতি পরিবর্তন করা যাবে না। এছাড়া সংস্কার প্রস্তাবে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ২০২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানকে একই কাতারে আনা সমুচিত হবে না। বিএনপি বলছে, গণপরিষদ কিংবা গণভোটের নির্বাচন নয়, আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত। সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার আলোচনার ভিত্তিতে এসব সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
রোববার জাতীয় সংসদের এলডি ভবনে পাঁচ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ওপর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে লিখিতভাবে মতামত জমা দেয় বিএনপি। এতে দলটি আরও জানিয়েছে, দুদক সংস্কারের ২০ প্রস্তাবে একমত, প্রশাসন সংস্কারের ২৬ প্রস্তাবের অর্ধেকে একমত রয়েছে। সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের আদলে লোয়ার জুডিশিয়ারি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের রিপোর্টে ২৭টির মধ্যে অধিকাংশ প্রস্তাব সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে মত দিয়েছে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নির্বাচনে ইসির স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে উল্লেখ করে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্টের বিষয়ে উচ্চকক্ষে আসন ও মনোনয়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেছে দলটি। তবে একই ব্যক্তি পরপর দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয় এবং নারীদের সংসদীয় আসন সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০ করার প্রস্তাবেও একমত রয়েছে।
ডিআর/এমবি