বাংলাদেশের পত্রিকা থেকে
বেড়েছে দারিদ্র্যের হার, কমেছে খাদ্য নিরাপত্তা

ডিজিটাল ডেস্ক
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৪৬

বাদি-আসামি কেউ কাউকে চেনেন না
বাংলাদেশের খবরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্টের পর সারা দেশে প্রায় ১ হাজার ১০০ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাগুলোয় লক্ষাধিক আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আসামি আরও ২ লাখ। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ৫০০ আসামি বিভিন্ন মেয়াদে পুলিশ রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রিমান্ড শেষে মাত্র একটি মামলার চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ।
সারাদেশে দায়ের করা এসব মামলায় হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হামলা ভাঙচুর, লুটপাট, চাঁদাবাজি ও দখলবাজির অভিযোগ করা হয়েছে। তবে বেশির ভাগ মামলায় দেখা গেছে বাদি চেনেন না বিবাদীকে এবং বিবাদী চেনেন না বাদিকে। জানা যায়, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দেশজুড়ে দায়ের হওয়া মামলার অনেক মামলার ক্ষেত্রে ঘটনা সম্পর্কে আসামিদের সিংহ ভাগ কিছুই জানেন না। বাদী চেনেন না আসামিকে, আসামিরাও চেনেন না বাদীকে।
ঈদে টোলঘরে যানজটের শঙ্কা, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার ব্যবহার কম
প্রথম আলোর প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, বড় ছুটি ও উৎসবের সময় টোলঘরকেন্দ্রিক দীর্ঘ যানজট দেখা যায় বাংলাদেশে এবার ঈদেও যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল দিতে এখন আর মানুষকে ব্যাংকে গিয়ে লাইন ধরতে হয় না। কিন্তু সেতু ও সড়কের টোল দিতে গিয়ে এখনও টোলঘর বা বুথে যানজট তৈরি হয়। যদিও দেশে স্বয়ংক্রিয় টোলব্যবস্থা চালু হয়েছে আরও পাঁচ-ছয় বছর আগে। তবে তার ব্যবহার নেই বললেই চলে।
দেশে মূলত সড়ক, উড়ালসড়ক ও সেতু থেকে টোল আদায় করা হয়। এসব স্থাপনার বেশির ভাগই সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের এবং সেতু বিভাগের অধীন।
বিশ্বের উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশেই টোল আদায় করা হয় স্বয়ংক্রিয়ভাবে। বাংলাদেশে এ ব্যবস্থা চালুর জন্য বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) ২০১৩ সালে ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ও আরএফআইডি (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি শনাক্তকরণ) স্টিকার চালু করে। দেশের সব ধরনের মোটরযানের জন্য তা বাধ্যতামূলকও করা হয়েছে। যানবাহনের মালিকেরা বাড়তি টাকা দিয়ে ডিজিটাল নম্বরপ্লেট ও আরএফআইডি স্টিকার যুক্ত করেছেন। কিন্তু তা কাজে লাগছে না।
শুরুতেই হোঁচট এনসিপির
যুগান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ব্যাপক জনপ্রত্যাশা সৃষ্টি করে সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করলেও দল গঠনের প্রথম দিন থেকে বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না এর।
সঙ্গে নানামুখী অভিযোগের চাপও ঘিরে ধরেছে তারুণ্যনির্ভর এ দলটিকে। এনসিপিকে নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের জন্ম নেওয়ার পেছনে সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। যার মাঝে অন্যতম হলো— বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক দল গঠন করা, গণ-অভ্যুত্থানে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোদ্ধাদের অবমূল্যায়ন, শহীদ পরিবারসহ আহতদের পাশে সক্রিয়ভাবে না থাকা এবং দল গঠনের সময় শুধু একটি কোরগ্রুপকে প্রাধান্য দেওয়া।
সংস্কারে আশা-নিরাশা
কালের কণ্ঠের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, অনেক বিষয়ে এক দলের চাওয়ার সঙ্গে অন্য দলের চাহিদা মিলছে না। আশা-নিরাশার এই দোলাচলে সংস্কার কতটা সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে জনপরিসরে নানামুখী আলোচনা চলছে।
ঐকমত্য কমিশন ১৬৬টি সুপারিশের ওপর রাজনৈতিক দলের মতামত নিচ্ছে। এর মধ্যে ৭০টি সংবিধান সংক্রান্ত, ২৭টি নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার সংক্রান্ত। বিচার বিভাগসংক্রান্ত ২৩টি, জনপ্রশাসন সংক্রান্ত ২৬টি ও ২০টি দুর্নীতি দমন কমিশন সংক্রান্ত।
এই সুপারিশে একমত, আংশিক একমত ও ভিন্নমতে 'টিক' চিহ্ন দিয়ে জানাতে 'স্প্রেডশিট' দেওয়া হয়েছে। তবে এর বাইরেও মতামত রাখছে দলগুলো। নির্বাচনের আগে সংস্কারকাজ কতটা সম্পন্ন করা সম্ভব— এ প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য এবং নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, "আমি মনে করি, ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন হলেও নির্বাচনকে সহায়তা করবে এমন অনেক সংস্কার প্রস্তাব নির্বাচনের অনেক আগেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব। যে প্রস্তাবগুলো সম্পর্কে ভিন্নমত আসছে সেগুলো হয়তো বাস্তবায়ন হবে না...কিছু সংস্কার নির্বাচনের পরে করতে হবে।"
সংস্কার হবে অধ্যাদেশে, পরে সংবিধান সংশোধন
আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, পাঁচটি সংস্কার কমিশনের দেওয়া সুপারিশগুলোর মধ্য থেকে ১২১টি প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নের জন্য চিহ্নিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এর মধ্যে দু'টি বিষয় রয়েছে, যেগুলো বাস্তবায়নের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন পড়বে। কিন্তু সরকার এ দুটি বিষয়ও অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এর একটি নিয়ে ইতিমধ্যে অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সংবিধান সংশোধন করে ওই বিষয়গুলো নতুন অনুচ্ছেদের মাধ্যমে সংবিধানে সংযোজন করা হবে বলে জানা গেছে।
সংবিধান সংশোধন করে বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়ে অধ্যাদেশ জারির বিষয়টি ভবিষ্যতে প্রশ্নের মুখে পড়বে বলে মনে করেন আইন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে। এ সরকারের নিজেরই সাংবিধানিক বৈধতা নেই। এখন সংবিধান সংশোধন করতে হবে, এমন সিদ্ধান্ত অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হলে প্রশ্ন দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসকের ৭৫ শতাংশ পদ শূন্য
দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশের ৪৩৫টি উপজেলা হাসপাতালের ৪৭ শতাংশ চিকিৎসকের পদ শূন্য। যে ৫৩ শতাংশ চিকিৎসক আছে, এর মধ্যে ২৮ শতাংশ চিকিৎসককে সংযুক্তি করা হয়েছে সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে।
সে হিসেবে এই মুহূর্তে উপজেলা হাসপাতালগুলোর ৭৫ শতাংশ চিকিৎসকের পদই ফাঁকা। অর্থাৎ, মাত্র ২৫ শতাংশ চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্থ্যসেবার কাজ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ ১১ই মার্চের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। এসব হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, চিকিৎসকের অভাবে তৃণমূল মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দিতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
আট মাসে সরকার পেয়েছে ২.৩ বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি
বণিক বার্তার প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন করে বিদেশি সহায়তা বৃদ্ধির প্রত্যাশা তৈরি হয়। তবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) বৈদেশিক ঋণের নতুন প্রতিশ্রুতি কমে গেছে। দাতাগোষ্ঠীর কাছ থেকে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬৮ শতাংশ। কমে গেছে অর্থছাড়ও।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) তথ্যানুসারে, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে বহুপক্ষীয় ও দ্বিপক্ষীয় ঋণের প্রতিশ্রুতি এসেছে কেবল দুই দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের।
অথচ গত অর্থবছরের একই সময়ে সাত দশমিক দুই বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি এসেছিলো। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের মতো প্রতিশ্রুতি কমেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া দেশের উন্নয়নে বৈদেশিক ঋণের নতুন প্রতিশ্রুতি আশা করে লাভ নেই। নির্বাচিত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকার চিন্তাভাবনা বিশ্লেষণ করেই মূলত বিদেশিরা দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন করেন। আর নতুন প্রকল্প তৈরি করা না গেলে বিদেশী প্রতিশ্রুতি মেলে না। দাতারা দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। সেই সঙ্গে হয়তো 'ওয়েট অ্যান্ড সি' পলিসি গ্রহণ করেছে।
বেড়েছে দারিদ্র্যের হার, কমেছে খাদ্য নিরাপত্তা
সমকালের প্রথম পাতায় বলা হয়েছে, দেশে দারিদ্র্যের হার এবং খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা আগের চেয়ে বেড়েছে। গত বছর বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) পরিচালিত এক ধারণা জরিপ বা পারসেপশন সার্ভেতে এমন চিত্র উঠে এসেছে। গতকাল সোমবার বিআইডিএসের নিজস্ব কার্যালয়ে আয়োজিত সেমিনারে আনুষ্ঠানিকভাবে জরিপের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
২০২২ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বিআইডিএসের ধারণা জরিপে এ হার হয়েছে ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ। যদিও বিবিএসের খানা আয় ও ব্যয় জরিপ দেশব্যাপী অনেক বড় নমুনার ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। আর বিআইডিএস পাঁচটি জেলার ওপর ধারণা জরিপ করেছে। বিআইডিএস বলেছে, তাদের জরিপটি খানা আয় ও ব্যয় জরিপের সঙ্গে তুলনা করার জন্য নয়। তবে ধারণা জরিপে এটি ফুটে উঠেছে যে, দুই বছর আগের চেয়ে দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় জরিপটি পরিচালিত হয়। ঢাকা, বান্দরবান, খুলনা, রংপুর ও সিলেট জেলা জরিপের জন্য নির্ধারণ করা হয়। মোট ৩ হাজার ১৫০টি খানা বা পরিবারের ওপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে শহরের খানা ১ হাজার ৯৯০টি এবং গ্রামীণ খানা ১ হাজার ১১৬টি। সবচেয়ে বেশি ৭৫০টি খানা ঢাকার।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ডব্লিউএফপির অফিসার ইনচার্জ সিসেমানি পারসেসমেন্ট। জরিপের ফল তুলে ধরেন সংস্থার গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইউনূস। বিআইডিএসের সাবেক মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন এবং ড. মোহাম্মদ ইউনূস যৌথভাবে জরিপ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমানে মানুষের অবস্থা যে আরও খারাপ হয়েছে, তা জরিপে উঠে এসেছে এবং বাস্তবতার সঙ্গে যার মিল রয়েছে। বিবিএসের জরিপে ২০২২ সালে গ্রামে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিবিএসের জরিপে শহরে দরিদ্র মানুষের হার ছিল ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। বিআইডিএসের জরিপে এসেছে ২০ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
এটিআর/