আরবদের মধ্যে দব খাওয়ার বেশ প্রচলন। এটি মরুভূমিতে বেড়ে ওঠা সরীসৃপ জাতীয় এক ধরনের প্রাণী। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এটি না খেলেও এটিকে হারাম বলেননি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ‘দব’ খাওয়া না খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো। তিনি বললেন, আমি নিজে তা খাই না, তবে তা খাওয়া হারামও বলি না ...।’ (তিরমিজি) এই হাদিসের ওপর ভিত্তি করে ফকিহ আলেমগণ দবকে হালাল আখ্যায়িত করেছেন।
আর আমাদের দেশের গুইসাপ দেখতে অনেকটা দবের মতোই। এজন্য কেউ কেউ বলে থাকেন যে, দবের মতো গুইসাপের মাংসও খাওয়া হালাল। মানে আরবের যেটা দব, আমাদের দেশে সেটা গুইসাপ। এজন্য গুইসাপ খেতে সমস্যা নেই। কিন্তু বিষয়টি কি আসলেই এরকম?
-67d0fcd7b94be.jpg)
এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশের খবর কথা বলেছে বিশিষ্ট আলেমেদ্বীন ও জিয়াউল উলুম ঢাকার মুহতামিম মুফতি রেজাউল হক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সঙ্গে। তিনি বলেছেন, এককথায় বললে গুইসাপ খাওয়া হারাম। এটি একটি হিংস্র ও নোংরা প্রাণী। এটি বিষাক্ত সাপ ও কীটপতঙ্গ খায় এবং এটিকে দেখলে ভয়ও লাগে।
পবিত্র কোরআনের সুরা আরাফের ১৫৭ নম্বার আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অথচ আল্লাহ তায়ালা সমস্ত নোংরা ও অপবিত্র জিনিস খাওয়া হারাম করেছেন। একই সঙ্গে হাদিসেও হিংস্র প্রাণী খাওয়াকে হারাম আখ্যা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই গুইসাপের মাংস খাওয়া যাবে না। এটি সম্পূর্ণ হারাম।
-67d0fd18ae047.jpg)
মুফতি রেজাউল হক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আরও বলেন, আর হাদিসে বর্ণিত দবকে গুইসাপের সঙ্গে তুলনা করা মোটেও ঠিক নয়। কারণ, গুইসাপ হিংস্র কিন্তু দব হিংস্র নয়। আরবের বাজারগুলোতে এগুলো স্বাভাবিক পোষ্য প্রাণীগুলোর মতো বেচাকেনা হয় এবং আরব শিশুরা এটির সঙ্গে খেলাধুলাও করে।
গুইসাপ আর দব যে এক নয়- এ বিষয়ে তিনি আরও যুক্তি দিয়ে বলেন, গুইসাপ বিষাক্ত পোকামাকড় খায়, পক্ষান্তরে দব খায় তৃণলতা ও ঘাস ইত্যাদি। একই সঙ্গে গুইসাপ জলে ও স্থলে উভয় পরিবেশেই বাস করতে পারে কিন্তু দব শুধুমাত্র স্থলেই বাস করে। এজন্য দবের হাদিসের ওপর ভিত্তি করে কোনোমতেই গুইসাপ খাওয়া হালাল বলা যাবে না।
বিএইচ/