মিরসরাইয়ে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা খুন, নেতাকর্মীদের সাক্ষ্যগ্রহণ

মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩:২৫
-678be3efe8668.jpg)
মিরসরাইয়ে বিএনপির গ্রুপিং, আধিপত্য বিস্তার এবং সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও খুনের ঘটনায় গঠিত কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি কর্তৃক গঠিত এই তদন্ত কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ওয়াদুদ ভূঁইয়া। কমিটিকে আগামী ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মিরসরাই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন, সদস্য আবদুল আউয়াল চৌধুরী এবং উপজেলা বিএনপি, মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ওয়াদুদ ভূঁইয়া।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মনিরুল ইসলাম ইউসুফ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আফসার চেয়ারম্যান, আজিজুর রহমান চৌধুরী, মিরসরাই পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক মহি উদ্দিন, বারইয়ারহাট পৌরসভা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন লিটন, সদস্য সচিব নিজাম উদ্দিন কমিশনার, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সরোয়ার উদ্দিন সেলিম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সরোয়ার হোসেন রুবেল প্রমুখ।
জানা যায়, মিরসরাই উপজেলা বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে দুটি গ্রুপে বিভক্ত। চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নুরুল আমিন এবং আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল আমিন চেয়ারম্যান এই গ্রুপগুলোর নেতৃত্বে রয়েছেন।
গত ৩১ আগস্ট মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের এক নির্মাণাধীন কারখানার সামনে সাহেরখালী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রফিক গণপিটুনিতে নিহত হন। এ ঘটনার পর বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেন, ডাকাতির নাটক সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।
এছাড়া, গত ১৩ জানুয়ারি মিরসরাই স্টেডিয়ামের বাণিজ্য মেলায় ছাত্রদল-যুবদলের সংঘর্ষে মিরসরাই পৌরসভা যুবদলের আহ্বায়ক কামরুল হাসানের অনুসারীদের হামলায় ছুরিকাঘাতে জাহেদ হোসেন মুন্না নিহত হন। তিনি মিরসরাই পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন।
এই খুনের ঘটনায় মুন্নার ভগ্নিপতি আরাফাত হোসেন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযানে কামরুল হাসানকে গ্রেফতার করে। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে বহিষ্কার করেছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেন, "মিরসরাইয়ে বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের দুই নেতার খুনের ঘটনা তদন্ত করছি। দলের কেন্দ্রীয় কমিটি আমাকে ৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। দলীয় নেতাকর্মী, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং বিভিন্ন পেশাজীবীর সঙ্গে কথা বলছি। অনেকে পরিচয় গোপন রেখেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। আমি দ্রুত রিপোর্ট জমা দেবো।"
এদিকে, মিরসরাইয়ের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের কারণ ও নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরোধ নিরসনে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয় নেতারা।
সাফায়েত মেহেদী/এমএইচএস